এসি মেশিন খারাপ, অনির্দিষ্টকালের জন্য ছানি অপারেশন বন্ধ রায়গঞ্জ মেডিক্যালে
বর্তমান | ০২ আগস্ট ২০২৪
সুমন রায়, রায়গঞ্জ: চোখের আঁধার কাটার সম্ভাবনায় আপাতত ইতি। কারণ, এসি খারাপ হওয়ায় চোখের ছানি অপারেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত ৩০ জুলাই থেকে চোখের ছানি অপারেশন করা হচ্ছে না বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। যাঁদের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল, তাঁরা পড়েছেন মহা ফ্যাসাদে। কবে এসি ঠিক হবে, সেবিষয়ে নিশ্চয়তা না থাকায় আপাতত অধিকাংশ রোগীর চোখে আঁধার নিয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই। কারণ, নার্সিংহোমে অপারেশন করানোর খরচ জোগানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছানি কাটাতে যে অপারেশন থিয়েটার ব্যবহার করা হয়, সেখানে কুলিং সিস্টেম বিকল হয়ে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। কারণ এই সিস্টেম অকেজো অবস্থায় অপারেশন করলে রোগীদের চোখে ইনফেকশন সহ আরও অনেক সমস্যা হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। চোখের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের অপারেশনে তাই কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। এমএসভিপি প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, মাইক্রোস্কোপিক সার্জারির সাহায্যে ছানি অপারেশন করা হয়। এর জন্য অপারেশন থিয়েটারে কুলিং সিস্টেম চালু থাকা বাধ্যতামূলক। থিয়েটারে যে সেন্ট্রাল এসি রয়েছে, তার মোটর খারাপ হয়েছে। কুলিং সিস্টেম না থাকলে রোগীদের চোখে ইনফেকশন হতে পারে। তাই বন্ধ রাখা হয়েছে অপারেশন। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারা ১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে বলে জানিয়েছে। তবে চোখের জরুরি অন্যান্য অপারেশন স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মেডিক্যালে সপ্তাহে গড়ে ৪০ জন রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়। ফলে কয়েকদিন অপারেশন বন্ধ থাকলে পরে রোগীর চাপ কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে।
গত সোমবার রায়গঞ্জ মেডিক্যালে চোখের সমস্যা নিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন করণদিঘি ব্লকের আলতাপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলদই এলাকার বাসিন্দা আনন্দ সিংহ। ডাক্তার জানান তাঁর চোখে ছানি পড়েছে। কিছু টেস্ট করতে বললে সেই রিপোর্টগুলি নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আটদিন পর ফের আসতে বলা হয়েছিল আনন্দকে।
তিনি বলেন, ছাত্র পড়িয়ে সংসার চলে। ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছি না কিছুদিন। রায়গঞ্জ মেডিক্যালে দেখালে ডাক্তার বলেন ছানি পড়েছে, অপারেশন করতে হবে। এখন অপারেশন বন্ধ থাকলে কতদিন ভুগতে হবে জানি না। বাইরে অপারেশন করানোর মতো সামর্থ্যও নেই।
রায়গঞ্জের বাসিন্দা রতন সাহার কথায়, আমাদের মতো গরিবদের একমাত্র ভরসা রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ। চোখের ছানির সমস্যায় ভুগছি। দ্রুত পরিষেবা ঠিক হলে অপারেশন করিয়ে আবার ঠিকমতো সব দেখতে পাব।