সংবাদদাতা, ইসলামপুর: ডাকাতি করেও শেষরক্ষা হল না। টহলদারিতে বেরনো পুলিসের হাতে ধরা পড়ল দুই ডাকাত। এবার ডাকাত দলের সঙ্গে বিহারের যোগ খুঁজে পেয়েছে পুলিস।
বুধবার গভীর রাতে ডালখোলার হাসন এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী লিটু সরকারের বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র সহ একদল দুষ্কৃতী ডাকাতি করে পালাচ্ছিল। সেসময় টহলদারিতে থাকা পুলিসকর্মীরা দু’জন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত আকাশ চৌহান ও পঙ্কজ কুমার বিহারের কিষানগঞ্জ জেলার ফরিংগোলার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসন বাজার সংলগ্ন এলাকায় লিটু সরকারের বাড়ি। বাড়ির লাগোয়া ছোট্ট একটি সোনার দোকান রয়েছে তাঁর। ক্রেতাদের চাহিদামতো ছোটখাটো অলঙ্কার তৈরি করেন তিনি। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, বৃদ্ধা মা ও ন’বছরের ছেলে।
লিটু জানান, পিছনের ঘরে তাঁর মা থাকেন। বুধবার রাতে গরমের জন্য দরজা বন্ধ করা হয়নি। সেখান দিয়েই ডাকাত দল ঘরে ঢুকেছিল। তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি সহ অন্যান্য অস্ত্র ছিল। মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিল তারা। লিটুর কথায়, ঘরে ঢুকে দুষ্কৃতীরা প্রথমে আমার দু’হাত পিছনের দিকে বেঁধে দেয়ে। ঘরের সমস্ত কিছু লন্ডভন্ড করে টাকা পয়সা, অলঙ্কার খুঁজছিল। কিছুক্ষণ পর তারা দোকানের সিন্দুকের চাবি চায়। টালবাহানা করছি দেখে রেগে গিয়ে খুব মারধর করে। দেড় হাত লম্বা একটি বন্দুকের হাতল দিয়ে আমাকে বুকে মেরেছে। লাঠি দিয়েও পিটিয়েছে তারা। তবে, ভাগ্য ভালো সেই সময় পুলিসের টহল দেওয়ার গাড়ি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিসের গাড়ির লাইট দেখে দুষ্কৃতীরা পালাতে শুরু করে। দুষ্কৃতীরা বাড়িতে মজুত ২২ হাজার টাকা নগদ, স্ত্রী ও ছেলের সোনার চেন, আমার হাতের দু’টি রিং এবং এক গ্রাহকের বানাতে দেওয়া দু’টি রিং লুট করে নিয়ে গেছে। ডাকাত দলে প্রায় ১০-১২ জন ছিল বলে দাবি লিটুবাবুর।
ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি জবি থমাস জানিয়েছেন, রাত ১টা নাগাদ ৫-৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে ঢুকেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল ওই বাড়ির একটি জুয়েলারির দোকানে ডাকাতি করা। কিন্তু আমাদের টহলদারি ভ্যান দেখে দুর্বৃত্তরা পাশের ধানক্ষেত দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিস ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডালখোলা থানা সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। তাদের শুক্রবার কোর্টে তোলা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, চলতি বছর জানুয়ারিতে ডালখোলা সাহাসরা গ্রামে ইব্রাহিম ও রফিক আলম দু’ভাইয়ের বাড়িতে একসঙ্গে ডাকাতি হয়েছিল। গত মার্চ মাসে ডালখোলার লালগঞ্জ লাগোয়া এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী লালবাবু কর্মকারের বাড়িতে ডাকাতি হয়। তারপর মে মাসে হাসান এলাকারই বাভোনিয়া এলাকায় এক প্রসাধনী ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল ডাকাতরা। এবার পুলিস নিরাপত্তা না বাড়ালে আতঙ্ক নিয়েই কাটাতে হবে।