এই সময়: জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমার উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে এবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পিতবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘লাইফ ইনশিওরেন্স ও মেডিক্যাল ইনশিওরেন্সের প্রিমিয়ামের উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করার জন্য আমরা কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাচ্ছি। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই আমরা এই দাবি তুলছি।’এ দিন রাজ্যসভার অধিবেশনেও তৃণমূলের তরফ থেকে এই দাবি জোরালো ভাবে তোলা হয়েছে। শুধু তৃণমূল নয়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে বুধবারই এই দাবি তুলেছেন খোদ কেন্দ্রের প্রবীণ মন্ত্রী নীতিন গড়করি। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছিলেন, বর্তমানে জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমার উপর ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি বলবৎ রয়েছে।
এতে আমজনতার উপর বিপুল বোঝা চাপছে বলে নাগপুর ডিভিশনাল লাইফ ইনশিওরেন্স কর্পোরেশনের কর্মী সংগঠনের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছিল এবং তিনি নিজেও এই দাবির সঙ্গে একমত বলে চিঠিতে জানান গড়করি। প্রবীণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই চিঠির প্রসঙ্গ তুলেই এ দিন সংসদে সরব হয় তৃণমূল।
বুধবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ইস্যুতে কেন্দ্রকে বিঁধে বলেছিলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমার উপরও জিএসটি চাপানো হচ্ছে, এটা লজ্জার। এর পিছনে তো সরকারের ভর্তুকি দেওয়া উচিত।’
এ দিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘এই বিমার উপর জিএসটি চাপানো অন্যায়, কারণ, এটা সাধারণ মানুষের নিজেদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর ক্ষমতাকে আঘাত করছে। কেন্দ্রীয় সরকার জনবিরোধী এই জিএসটি অবিলম্বে প্রত্যাহার না-করলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’
এ দিন রাজ্যসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন তৃণমূলের দুই সাংসদ সাকেত গোখলে ও দোলা সেন। স্বাস্থ্য এবং জীবনবিমার পলিসির উপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহার করার দাবি জানান তাঁরা। সাকেতের প্রশ্ন, ‘স্বাস্থ্যের সুরক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। ফলে সেখানে কেন ১৮ শতাংশ জিএসটি ধার্য করা হয়েছে?’
দোলার কথায়, ‘নীতিন গড়করি অর্থমন্ত্রীকে যে আবেদন করেছেন, আমি তাকে সমর্থন জানাচ্ছি। হয় এই জিএসটি প্রত্যাহার অথবা পদত্যাগ করুন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।’ আজ, শুক্রবার বিষয়টি লোকসভাতেও তুলে ধরবে তৃণমূল।
যদিও বিজেপির এক প্রবীণ সাংসদের প্রশ্ন, ‘হঠাৎ আজ এ নিয়ে কেন লাফাচ্ছে তৃণমূল? বিষয়টি কি জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তুলেছিল কখনও?’ যদিও জোড়াফুলের পাল্টা যুক্তি, নীতিন গড়করি তো নিজেও জিএসটি কাউন্সিলের বিষয়টি জানেন। তাহলে আগে তাঁকে কেন প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন না বিজেপি নেতৃত্ব?