কলকাতায় গা ঢাকা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জামাতের সদস্যদের! হোটেলে সকলের নথি রাখার নির্দেশ পুলিশের
প্রতিদিন | ০২ আগস্ট ২০২৪
অর্ণব আইচ: কয়েকদিন আগেই ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ঘটেছে প্রাণহানিও। আন্দোলনের সময় হামলায় রক্তপাতের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে বিস্তর। এবার চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতা ও তার আশপাশের জেলাগুলোতে গা ঢাকা দিয়েছে বাংলাদেশের ‘হামলাকারী’রা। এমনই খবর এসেছে গোয়েন্দাদের কাছে। তাদের সন্ধানে এবার নতুন করে কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছে গোয়েন্দারা। বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে হোটেলগুলোতে। পুলিশের কড়া নির্দেশ, অতিথিদের একজনের নাম লিখে বাকিদের জন্য ‘প্লাস’ লিখলে চলবে না। প্রত্যেকের নাম, ঠিকানা ও পরিচয়পত্রের নথির কপি রাখতে হবে হোটেলগুলোকে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বাংলাদেশে চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের জেরে প্রায় দেড়শো জনের মৃত্যুর পর হামলাকারীদের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে র্যাব ও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এই হামলাকারীদের পিছনে অভিযুক্ত বাংলাদেশের জামাত ই ইসলামি শিবির ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে, বাংলাদেশ পুলিশ হামলাকারীদের চিহ্নিত করেছে। তাই তাদের একটি অংশ বাংলাদেশের পুলিশের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে এরাজ্যে এসে গা ঢাকা দিয়েছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।
এই ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশের তরফে সতর্কও করা হয়েছে। এই দুটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার ফলে সংগঠনের কিছু নেতা ও সদস্যরাও চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতা বা তার আশপাশের জেলাগুলোর কোনও ডেরায় গা ঢাকা দিতে পারে, এমন খবরও এসেছে। এই খবরই গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করছেন গোয়েন্দারা। সেই ক্ষেত্রে তারা এই রাজ্যে বাসিন্দা, এমন সঙ্গীদের সাহায্য নিতে পারে। বেশ কিছু মাঝারি ও ছোটমাপের হোটেল রয়েছে, যেগুলো একজনের নাম ও পরিচয়ই রেজিস্টার খাতায় লেখে। ওই মূল ব্যক্তির সঙ্গে যে অতিথিরা আসে, তাদের নাম বা পরিচয়ের বদলে অনেক সময়ই ‘প্লাস’ লিখে সংখ্যা বসিয়ে দেওয়া হয়। ফলে মূল অতিথির সঙ্গে সহজেই গা ঢাকা দিতে পারে বাংলাদেশের পলাতক হামলাকারীরা। তাই প্রত্যেকটি হোটেলকে পুলিশের কড়া নির্দেশ, যতজনই হোটেলে অতিথি হিসাবে এসে থাকুন না কেন, রেজিস্টার খাতায় ‘প্লাস’ লিখে কোনও সংখ্যা লেখা চলবে না। প্রত্যেক অতিথির নাম ও পরিচয় লেখা আবশ্যিক। সেগুলো গোয়েন্দা দপ্তর ও থানার আধিকারিকরা পরীক্ষা করবেন।
জানা গিয়েছে, প্রত্যেকদিন ওই নামগুলো সংশ্লিষ্ট থানাকে জানাতে হবে। যদি কোনও ব্যক্তি নিজের পরিচয়পত্র না দিতে পারে, অথবা পরিচয়পত্র নিয়ে কোনও সংশয় থাকে, সঙ্গে সঙ্গেই হোটেল কর্তৃপক্ষ যেন ওই ব্যক্তিকে বসিয়ে রেখে থানায় বিষয়টি জানায়। এছাড়াও শহরের কিছু অঞ্চলে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকরাও অল্পদিনের জন্য বাংলাদেশি ও অন্য জায়গা থেকে আসা ব্যক্তিদের ঘর ভাড়া দেন। তাঁদেরও নতুন করে একইভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হচ্ছে। কোনও হোটেল বা বাড়ির মালিক এই নিয়ম না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।