দুর্গতদের পাশে ‘দেবদূত’, সাঁতরে গ্রামবাসীদের প্রাণ বাঁচালেন পুলিশ অফিসার
এই সময় | ০৩ আগস্ট ২০২৪
আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। সুরক্ষার জন্য মানুষ ছুটে যান পুলিশের কাছেই। সেই পুলিশই এবার সাঁতরে প্রাণ বাঁচালেন জলমগ্ন এলাকায় আটকে যাওয়া তিনজন গ্রামবাসীকে। ঘটনা পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি এলাকায়। গ্রামবাসীর জন্য সাক্ষাৎ ‘দেবদূত’ হয়ে হাজির হয়েছিলেন মেমারি থানার ASI দীপক পাল।টানা বৃষ্টির জেরে জলে ভাসছে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ব্লক। এক রাতের টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোথাও মানুষজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিরাপদ জায়গায়,আবার কোথাও ঘরের মধ্যে জল ঢুকে ঘরের মধ্যেই বন্দি হয়ে রয়েছে মানুষজন। ডুবেছে বিভিন্ন ব্লকের রাস্তা। যানবাহন চলাচলে ঘটছে ভিন্ন। লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ অন্যশে।
বৃহস্পতিবার একটানা বৃষ্টি জেরে বিভিন্ন নদীর পাশাপাশি বেড়েছে বেহুলা নদীর জলও। বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে এলাকাও। তখন গভীর রাত মেমারি থানায় খবর আসে মেমারি গন্তার এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত মগরা খাসপাড়া এলাকায় একই পরিবারের তিনজন বেহুলা নদীর জল বাড়ার ফলে আটকে রয়েছে। সেই খবর দেওয়া হয় সিভিল ডিফেন্সেকেও। ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেন মেমারি থানার পুলিশ অধিকারিকরাও।
ঘটনাস্থলে আগেই পৌঁছে যান মেমারি থানার ASI দীপক পাল। এরপর উপস্থিত হন ওসি দেবাশিস নাগও। রাত বাড়ার কারণে সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের আসতে বেশ কিছুটা দেরি হচ্ছিল। তাঁদের জন্য অপেক্ষা না করে এএসআই দীপক পাল নিজের পুলিশের ইউনিফর্ম ছেড়ে বেহুলা নদীতে নিজেই ঝাঁপ দেন। সাঁতরে পার হয়ে আটকে থাকা পরিবারের তিনজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তিনি নিজেই। উদ্ধার করে তাঁদের পাঠানো হয়েছে উদ্ধার কেন্দ্রে।
বর্ধমানে দক্ষিণের SDPO অভিষেক মণ্ডল জানান, খাসপাড়া এলাকায় বেশ কিছু পরিবার জলের মধ্যে আটকে যায়। কিছু পরিবার নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পেরেছিল। তবে একটি পরিবার সেখানে আটকে পড়েছিল। তবে, রাত বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকি না নিয়ে মেমারি থানার এএসআই সাঁতরে গিয়ে ওই পরিবারটিকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত তিনজনেই বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডেপুটি পুলিশ সুপার। উল্লেখ্য, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের জন্য বর্ধমান, বাঁকুড়া, মুশির্দাবাদ সহ একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।