রমেন দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর প্রায় এক বছর পর ব়্যাগিং রুখতে একাধিক পদক্ষেপের কথা জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত। শুক্রবার নবাগত ছাত্রদের জন্য একাধিক ভাবনা এবং সেই ভাবনার প্রায়োগিক দিকের কথাও জানান উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। ইতিমধ্যেই নবাগত অর্থাৎ স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী, এই ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসের মধ্যেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছে নবাগত ছাত্রদের।
এর পাশাপাশি উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ওয়ার্ডেন হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন কোনও অধ্যাপক। স্নাতকস্তরের নবাগত আবাসিক ছাত্রদের হস্টেলে ওয়ার্ডেন হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন অধ্যাপকরা। অন্যান্য অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক হস্টেলেই একই পদ্ধতিতে থাকবেন ওয়ার্ডেন। যিনি মূলত হস্টেল সংক্রান্ত বিষয়, নিরাপত্তা খতিয়ে দেখবেন এবং পর্যবেক্ষণ করবেন। শিক্ষাবিদদের একাংশ বলছেন, গত বছর ছাত্রমৃত্যুর পর এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক! এর সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিতর্কিত’ মেন হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের না রাখার পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে বলেও জানান উপাচার্য। যদিও এই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলাকালীন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল ক্যাম্পাসে। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই ব়্যাগিং নিয়েও নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। এতদিন অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি বা তার পরের অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড থাকলেও এবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণের জন্য অ্যান্টি ব়্যাগিং মনিটরিং কমিটি তৈরির পথে হাঁটছে কর্তৃপক্ষ। যা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে বেনজির বলেই মনে করছেন অনেকেই। এদিন রাজ্য সরকারকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অর্থ সাহায্য নিয়েও ধন্যবাদ জানান উপাচার্য। অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ব়্যাগিং মুক্ত করতে যা যা পদক্ষেপ প্রয়োজন আমরা সব করেছি বা করছি। একটি অনভিপ্রেত ঘটনা, ছাত্রমৃত্যু ঘটেছে। যে ঘটনায় শোকপ্রকাশ করার মতো ভাষা নেই। তবুও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, এই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে আমাদেরও।”