• দক্ষিণেশ্বরের গেস্ট হাউসে বিহারের ২ দুষ্কৃতী কারা?
    এই সময় | ০৩ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়, দক্ষিণেশ্বর ও ব্যারাকপুর: বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুবোধ সিংকে গ্রেপ্তার করে এ রাজ্যে আনার পর থেকেই আশঙ্কাটা ছিল পুলিশ ও সিআইডির। হয় তার উপরে আক্রমণ হতে পারে। নয়তো সে বাইরে থেকে লোক এনে নতুন করে অপরাধ সংঘঠিত করতে পারে। তাই তাকে হেফাজতে রাখা বেলঘরিয়া থানাকে কার্যত দুর্গে পরিণত করেছিল ব্যারাকপুর কমিশনারেট।নজরদারি চলছিল আশেপাশের এলাকাতেও। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অদূরের একটি গেস্ট হাউসে অভিযান চালিয়ে বিহারেরই দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করল দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ। ধৃতদের থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি ওয়ান শটার পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলি। তারা কী উদ্দেশ্যে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত ঘাঁটি গেড়েছিল, তারা সুবোধের গ্যাংয়েরই কেউ, নাকি তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দুষ্কৃতী সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

    শুক্রবারই সুবোধকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চার দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিনই বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় সুবোধের ভয়েস স্যাম্পল টেস্টেরও অনুমতি দেন বিচারক।

    পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণেশ্বরে ধৃত দুই দুষ্কৃতী অমিত কুমার এবং সুমন কুমার বিহারের বৈশালীর বাসিন্দা। এ দিন তাদেরও ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলাটি এ দিনই দক্ষিণেশ্বর থানার হাত থেকে গিয়েছে ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে৷ জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সিংহদুয়ারের কাছে একটি গেস্ট হাউস ভাড়া নিয়েছিল দু’জন। সন্ধ্যার পরই গেস্ট হাউস ছাড়ার কথা ছিল।

    কিন্তু তার আগেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘তাদের অতীত অপরাধের কোনও রেকর্ড এখনও পাওয়া না গেলেও, ঠিক কী উদ্দেশ্যে তারা এসেছিল, কোনও প্ল্যান তাদের ছিল কি না সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ সূত্রের খবর, জেরায় তারা পুলিশকে সুবোধ-গ্যাংয়ের সঙ্গে নিজেদের যোগের কথা বলেছে। আবার ব্যারাকপুরের এক বিরিয়ানির দোকানে হামলা চালানোর জন্য এসেছিল বলেও দাবি করেছে জেরায়।

    ১৫ জুন অজয়ের গাড়ি গুলি চালানোর কিছুক্ষণ পরেই বেলঘরিয়া থানায় থাকাকালীনই অজয়ের কাছে হুমকি ফোন আসে। সুবোধের নাম করে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘বচ গয়া সালা..’। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ওই হুমকি ফোনের কথা স্বীকার করেছে সুবোধ। তাই তার ভয়েস স্যাম্পল টেস্টের আবেদন করেছিল পুলিশ। ৬ অগস্ট সুবোধের কণ্ঠস্বর পরীক্ষা হবে আদালতে। একই মামলায় সুবোধের ডান হাত রোশন যাদবেরও একই দিনে ভয়েস টেস্টের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

    ব্যারাকপুর আদালতের এক জুনিয়র আইনজীবীকে জেটিয়া থানার ওসির হেনস্থা করার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে এসিজেএমের এজলাসে কর্মবিরতি শুক্রবারও অব্যাহত ছিল। এ দিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় হেলমেট পরিয়ে সুবোধকে আদালতে তোলা হলেও তার হয়ে কোনও আইনজীবী মামলা লড়তে ওঠেননি।

    বাধ্য হয়ে বিচারক সুবোধকে চার দিনের জেল হেফাজতে পাঠান। বিকেলে আদালত থেকে সুবোধকে বের করে ব্যারাকপুর সাব জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যবসায়ীদের হুমকি ফোনের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে হাসি মুখে সুবোধ জবাব দেয়, ‘ইয়ে সব ফালতু বাত হ্যায়।’
  • Link to this news (এই সময়)