অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান পেতে বিলম্ব, প্রশ্নের মুখে পুরসভার ইওডিবি ব্যবস্থা
এই সময় | ০৩ আগস্ট ২০২৪
বাড়ি তৈরির জন্য বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন করাতে গিয়ে যাতে মানুষকে হয়রানির শিকার হতে না হয় সে জন্য ‘ইওডিবি’ (ইজি অফ ডুয়িং বিজনেস) ব্যবস্থা চালু করেছে কলকাতা পুরসভা। এ জন্য পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ, অ্যাসেসমেন্ট, ড্রেনেজ, দমকল, কেএমডিএ সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরকে এই অনলাইন সিস্টেমের মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। ইওডিবি ব্যবস্থা চালু হওয়ার সময় পুরকর্তারা দাবি করেছিলেন, নয়া ব্যবস্থায় বাড়ি নির্মাণের জন্য নাগরিকদের আর এই সব দপ্তর থেকে আলাদা করে ছাড়পত্র নিতে হবে না।অনলাইনে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাছে বিল্ডিং প্ল্যান জমা করলেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এই সব দপ্তর থেকে ক্লিয়ারেন্স চলে আসবে। যদিও বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটছে বলে দাবি করছেন অনেকে। এ নিয়ে মেয়রের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন একাধিক কাউন্সিলার। বিভিন্ন মহল থেকে বারবার অভিযোগ উঠতে থাকায় বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ইওডিবি ব্যবস্থা চালু করে আখেরে কী লাভ হলো? কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ইওডিবি ব্যবস্থায় যেখানে এক মাসের মধ্যে স্যাংশন প্ল্যান পেয়ে যাওয়ার কথা সেটা পেতে চার-পাঁচ মাস সময় লেগে যাচ্ছে। তার কারণ, কলকাতা পুর এলাকায় বাড়ি নির্মাণের জন্য পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ ছাড়াও জায়গা বিশেষে দমকল, কেএমডিএ, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন দপ্তরের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়।
এছাড়াও কলকাতা পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট, নিকাশি, জল সরবরাহ, সার্ভে সহ বিভিন্ন বিভাগের অনুমোদন লাগে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার ঠিকা কন্ট্রোলের ছাড়পত্র লাগে। তারা ঠিক সময়ে ফাইল না ছাড়ায় বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দিতে বেশি সময় লাগছে। বিল্ডিং বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী, সবথেকে বেশি ফাইল আটকে রয়েছে নিকাশি বা ড্রেনেজ, জল সরবরাহ বিভাগ, কেএমডিএ এবং দমকলের কাছে।
বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘অন্যরা ফাইল আটকে রাখছে অথচ তার জন্য কথা শুনতে হচ্ছে আমাদের। বিল্ডিং প্ল্যান পেতে দেরি হলে লোকে আমাদেরই দায়ী করে।’
এলবিএস (লাইসেন্সড বিল্ডিং সার্ভেয়ার্স) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনিমেষ গুড়িয়া বলেন, ‘ইওডিবি ব্যবস্থায় যেখানে তাড়াতাড়ি বিল্ডিং প্ল্যানের স্যাংশন পাওয়ার কথা সেখানে আগের থেকে বেশি সময় লাগছে।’
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘অনেক সময় কাগজপত্র না থাকলে বিল্ডিং প্ল্যান পেতে দেরি হয়। মানুষের সুবিধার জন্য ইওডিবি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যে কোনও নতুন জিনিস চালু করতে গেলে শুরুর দিকে একটু সমস্যা হয়। এই সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমাদের অফিসাররা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।’