রায়গঞ্জ মেডিক্যালের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সুশান্ত রায়। শুক্রবার তিনি মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এক সময়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ (উত্তরবঙ্গ) ছিলেন সুশান্ত। এ দিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা, রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার, মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায়, অধ্যক্ষ কৌশিক সমাজদার-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। পরে, তিনি সুপারের ঘরে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্সদের একাংশ সুশান্তের কাছে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়েছেন।
সুশান্ত পরে বলেছেন, “প্রশিক্ষণের অভাবে মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের এজেন্সি নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীরা চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ঠিকমতো নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। আমি পুলিশ সুপারকে তাঁদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ করেছি।” পুলিশ সুপার বলেন, “মেডিক্যালের রক্ষীদের পুলিশের তরফে নিরাপত্তার প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিতে বলেছি। মেডিক্যালে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। এ ছাড়া, রায়গঞ্জ থানার পুলিশকর্মীদের নিয়মিত মেডিক্যালের সর্বত্র নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মেডিক্যালে কেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক? মেডিক্যাল সূত্রের খবর, মাস দেড়েক আগে, এক শিশুর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে মেডিক্যালে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছিল। ওই শিশুর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসক ও হাউস স্টাফদের মারপিট বেধে যায়। ওই ঘটনার জেরে, জুনিয়র চিকিৎসক ও হাউস স্টাফদের আন্দোলনে দু’দিন চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভ ও গোলমাল লেগে রয়েছে বলে অভিযোগ। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগও উঠছে।
সুশান্ত বলেন, “মনে রাখতে হবে, এই মেডিক্যালে প্রথম ব্যাচের ছাত্রেরা জুনিয়র চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। হাউস স্টাফ কম রয়েছে। ফলে, জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী সবাইকে কাজের পরিবেশ করে দিতে হবে।” সুশান্ত জানান, এক মাসের মধ্যে রায়গঞ্জের আব্দুলঘাটায় মেডিক্যালের দ্বিতীয় ভবনে যাওয়ার রাস্তা তৈরির টেন্ডার-প্রক্রিয়া শেষ করার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে সচেতনতামূলক কর্মসূচির উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে।