• ​​আজ কটালের ভয়ে কাঁটা সুন্দরবন, ফুঁসছে সমুদ্র! ত্রাণ মজুত
    এই সময় | ০৪ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: ঘূর্ণাবর্ত ও মৌসুমি অক্ষরেখার জোড়া ফলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনাজুড়ে দুর্যোগ অব্যাহত। শুক্রবার ভারী বৃষ্টির পর শনিবার সকাল থেকে জলমগ্ন জেলার নিচু এলাকাগুলি। বিশেষ করে নামখানা, কাকদ্বীপের একাধিক এলাকায় বাড়ির মধ্যে জল ঢুকেছে। বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে দমকা বাতাস বইছে।সুন্দরবন উপকূলে ঝড়ের দাপট বেশি থাকায় নদী ও সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই অমাবস্যার কটালের জেরে রবিবার দুর্বল বাঁধ ভেঙে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা বেড়েছে উপকূল জুড়ে।

    এ দিনও সুন্দরবনের বেশ কিছু ফেরি পরিষেবা বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। ভুটভুটি ও লঞ্চে যাত্রী পরিবহণে ছিল কড়া নজরদারি। লঞ্চ, ভেসেল ও ভুটভুটি চালকদের সতর্ক করা হয়েছে। আজ, রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে অমাবস্যার কটাল। তার ফলে নদী, সমুদ্রের জলস্তর আরও বৃদ্ধি পাবে। সুন্দরবনের নামখানা, কাকদ্বীপ, রায়দিঘি, পাথরপ্রতিমা, বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর এবং মৌসুনি দ্বীপে অসংখ্য মাটির বাঁধের বেহাল অবস্থা।

    এ দিন বিকেলেই জোয়ারের প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে বাঁধ উপচে সমুদ্রের জল ঢুকতে শুরু করেছে মৌসুনি দ্বীপে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এ দিন বৈঠক করা হয়। বিপর্যয় মোকাবিলায় যুক্ত সব দপ্তরের আধিকারিকরাও যোগ দিয়েছিলেন সেই বৈঠকে। সুন্দরবনের উপকূল এলাকার প্রতিটি ব্লকে ত্রাণ মজুত রাখতে বলা হয়েছে।

    প্রয়োজনে উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, সুন্দরবনের উপকূলে মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করতে দুপুর থেকে পুলিশ মাইকে প্রচার শুরু করে। গঙ্গাসাগর উপকূলের ভাঙন মেরামতের কাজ বৃষ্টির জেরে ব্যাঘাত ঘটায় ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেচ দপ্তর এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

    নামখানার দুর্বল নদী বাঁধ লাগোয়া বাসিন্দাদের মাইকে প্রচার করে অন্যত্র সরে যাওয়ার কথা বলেছে পুলিশ। নামখানার দেবনগর এলাকায় চিনাই নদীর বাঁধের জরাজীর্ণ অবস্থা। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অজিত গিরি এবং নামখানা থানার ওসি বিভাস সরকার দেবনগরের বাঁধ ঘুরে দেখেন। বৃষ্টিতে বেশ কিছুটা অংশের বাঁধে ধস নেমেছে বলেও তাঁরা দেখতে পান।

    ভাঙা বাঁধ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার কথা মাইকে প্রচার করে পুলিশ। নামখানা ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে বিকেল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অজিত গিরি। ইতিমধ্যেই বাঁধের কাছে তৈরি করা হয়েছে খাঁচা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেসিবি গাড়ি।

    সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানান, ‘নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই নদী বাঁধের মাটি নরম হয়ে গিয়েছে। তার উপর অমাবস্যার কটালে নদী এবং সমুদ্রে জলস্তর বৃদ্ধি পাবে। প্রত্যেক পঞ্চায়েত এবং ব্লক অফিসে শুকনো খাবার এবং ত্রাণ মজুদ রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে উপকূলের বাসিন্দাদেরকে সরিয়ে আনা হবে।’
  • Link to this news (এই সময়)