এই সময়, উলুবেড়িয়া: ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির জেরে ডিভিসি থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, শনিবার বিকেল পর্যন্ত মাইথন থেকে ১০ হাজার এবং পাঞ্চেত থেকে ৬৫ হাজার কিউসেক অর্থাৎ মোট ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল আজ, রবিবার রাতে এসে পৌঁছবে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতা-২ ব্লকে।আগাম বৈঠক করে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন প্রশাসনিক কর্তারা। শনিবার হাওড়ার জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। আজ, রবিবার উদয়নারায়ণপুরেও একটি বৈঠক হওয়ার কথা। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও।
ইতিমধ্যে দামোদর সংযুক্ত আমতার রামপুর খাল ও উদয়নারায়ণপুরের অন্যান্য খালগুলি থেকে কচুরিপানা তোলা হচ্ছে। আমতা-২ ব্লকের ভাতেঘড়ি, কানসোনা, খোসালপুরে রামপুর খালেরও কচুরিপানা তোলার কাজ চলছে। কারণ, নদীতে জল আসার পর যাতে খালগুলি থেকে সহজে জল বেরিয়ে যেতে পারে তাই কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
সোমেশ্বর কালীতলাতে স্লুইস গেটের সংস্কারের কাজও যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে হচ্ছে বলে জানায় সেচ দপ্তর। দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেটরি কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তেনুঘাট থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ায় পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়ানো হবে। মাইথন পাঞ্চেত মিলিয়ে এক লাখ কিউসেক ছাড়িয়ে যেতে পারে।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও শনিবার সকালে জল ছাড়া হয় ৭০ হাজার কিউসেক। বিকেলে সেই পরিমাণ কমে হয় প্রায় ৫৯ হাজার কিউসেক। রাতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কয়েক দিনের বর্ষায় এমনিতেই জল জমেছে উদয়নারায়ণপুরে। তার মধ্যে ডিভিসি জল ছাড়ায় ওই জল দামোদর নদে প্রবেশ করবে। বৃষ্টিতে মান্দারিয়া খালেও জল বেড়েছে। পেঁড়ো থানা ও উদয়নারায়ণপুর বিধানসভার অধীনে পড়ে মান্দারিয়া খাল।
উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজার বক্তব্য, ‘আগে ডিভিসি জল ছাড়ার পরেই উদয়নারায়ণপুরে বন্যা হতো। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বন্যা প্রতিরোধের মেগা প্রোজেক্টে দামোদরের দু’পাড়ে যে ভাবে বাঁধ বাঁধা হয়েছে তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে।’
হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক আজার জিয়াও বলেন, ‘বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ হয়েছে। আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। ডিভিসি থেকে জল ছাড়া ও বৃষ্টির কারণে যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, তাই জেলাশাসকের কার্যালয়, মহকুমাশাসকের কার্যালয় ও ব্লক অফিসগুলিতে বিশেষ কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। ব্লকগুলিতে ত্রিপল পাঠানো হয়েছে।’
ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার খবরের পর শনিবার আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জয়পুরের ব্লক অফিসে সব দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তিনিও বলেন, ‘বন্যা প্রতিরোধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেগা প্রোজেক্টের ফলে নদী বাঁধের উচ্চতা বেড়েছে। তবে আমরা সতর্ক আছি।’