• অনুমোদনহীন ল ডিগ্রিতে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
    এই সময় | ০৪ আগস্ট ২০২৪
  • বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদন ছাড়াই নাকি চলছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ! অন্তত এমনই দাবি প্রতিবেশী বিহার বার কাউন্সিলের। তথ্য বলছে, ২০১১ থেকে অনুমোদনহীন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে এই বিষয়ে দায়ের মামলায় গত সপ্তাহে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে (বিসিআই) গোটা দেশে কোথায় কত এমন অনুমোদনহীন ল কলেজ চলছে--তিন সপ্তাহের মধ্যে তার খতিয়ান পেশের নির্দেশ দিয়েছেন।আর তার ঠিক একদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, বার কাউন্সিলগুলি কোনও আইনজীবীর নাম নথিভুক্ত করার জন্যে নির্দিষ্ট অঙ্কের চেয়ে বেশি টাকা নিতে পারবে না। প্রশ্ন উঠেছে, প্রায় ১৪ বছর ধরে যদি অনুমোদনই না থাকে তা হলে কী করে বিশ্ববিদ্যালয় এত বছর ধরে আইন বিভাগ চালাচ্ছে। বিসিআই-এর অনুমোদন না থাকা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা কেউ কি আদৌ আইনজীবী হিসেবে বৈধ?

    আরও প্রশ্ন, অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণদের কী করে রাজ্য বার কাউন্সিল আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে! কোনও প্রশ্নেরই অবশ্য সন্তোষজনক জবাব মিলছে না। এই সূত্রেই অবশ্য অনুমোদনহীন আইন কলেজ নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন এবং বারে নথিভুক্তির টাকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পরস্পর সম্পর্কিত বলে দাবি আইনজীবীদের একাংশের।

    তাঁরা জানাচ্ছেন, সাধারণ ভাবে কোনও কলেজ থেকে ল পাশ করা কাউকে আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাজ্য বার কাউন্সিলই। আইনত নাম এনরোলমেন্টে সাধারণ ক্যাটিগরিতে ৭৫০ এবং এসসি/এসটিদের ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা নেওয়ার কথা। বাস্তবে এ রাজ্যের বার কাউন্সিল নেয় যথাক্রমে ১৪ হাজার এবং সাড়ে ১২ হাজার টাকা! অভিযোগ, বিপুল পরিমাণ টাকার হাতছানিতেই বৈধ-অবৈধ আর দেখা হয় না।

    উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০২৩-এ পাশ করে বিহারের কিষানগঞ্জের অভিষেক দত্ত আইনজীবী হিসেবে শংসাপত্র পেতে বিহার বার কাউন্সিলে আবেদন করেছিলেন। বিহার বার কাউন্সিল তাঁকে জানায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ বার বিসিআই-এর নথিভুক্তই নয়। এই প্রেক্ষিতেই অভিষেক মামলা করেছেন কলকাতা হাইকোর্টে।

    এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, এনরোলমেন্টে বেশি টাকা নেওয়া বন্ধ করতেই হবে। যার প্রেক্ষিতে বিসিআই সব রাজ্যকে ৩০ জুলাই থেকে এনরোলমেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ১১ অগস্ট সব রাজ্যের প্রতিনিধিকে নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকও ডেকেছ। তার আগে শুক্রবার কলকাতায় বৈঠকে বসে রাজ্য বার কাউন্সিল।

    এনরোলমেন্টে বাড়তি টাকা নিয়ে জানতে রাজ্য কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে ফোন করা হলে কেউ একজন ফোন ধরে জানান, তিনি নেই। কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, সব রাজ্যেই এনরোলমেন্টে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়। সেই টাকায় কল্যাণমূলক কাজকর্ম চলে।

    রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দাবি, ‘১৯৬৫ থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু বিসিআই এখন নানা অজুহাতে টাকা দাবি করছে। এটা গোটা দেশজুড়েই চলছে। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন ও নির্দেশে সমস্যার ছবিটা স্পষ্ট হবে এবং জটিলতা কাটবে বলেই আমরা আশাবাদী।’
  • Link to this news (এই সময়)