• ক্লান্ত হিন্দু পুণ্যার্থীর হাতে শরবত-জল তুলে দিচ্ছেন মুসলিম বিধায়ক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য চিত্র মুর্শিদাবাদে ...
    আজকাল | ০৪ আগস্ট ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির রাখলেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। নিজে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও শ্রাবণ মাসের শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়া ক্লান্ত তীর্থযাত্রীদের জন্য পথের ধারে ক্যাম্প করে খাবার এবং জলের ব্যবস্থা করেছেন। 

    শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়া পুণ্যার্থীদের নিজে হাতে তুলে দিচ্ছেন শরবতের গ্লাস, জলের বোতল, খিচুড়ি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই চিত্রই মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্য বলে বিধায়ক জানিয়েছেন।  

    প্রতিবছর বাংলার শ্রাবণ মাসে হাজার হাজার পুণ্যার্থী মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থেকে ঝাড়খণ্ডের শিবগাদি এলাকায় পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত একটি মন্দিরে শিবের মাথাতে জল ঢালতে যান। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী একাধিক জেলা থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী ফরাক্কার গান্ধী ঘাটে গঙ্গা নদী থেকে জল ভরে কেদারনাথ ব্রিজ পার করে পায়ে হেঁটে ঝাড়খন্ডে যান। সেখানে বারহারয়াতে রাত কাটিয়ে আবার পায়ে হেঁটে শিবগাদিতে মন্দিরে গিয়ে মহাদেবের মাথায় জল ঢালেন। 

    মনিরুল ইসলাম বলেন," মুর্শিদাবাদ থেকে ঝাড়খণ্ডে যেখানে পুন্যার্থীরা জল ঢালতে যান তার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এই দীর্ঘ পথ পার হতে তাদের প্রচুর সময় লাগে। তাই এ বছর আমি বেনিয়াগ্রাম অঞ্চলের চন্ডিপুরে পথের ধারে তীর্থযাত্রীদের জন্য পানীয় জল, শরবত এবং খিচুড়ির পরিবেশন করার একটি ক্যাম্প করেছি। শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার সময় যে সমস্ত পুণ্যার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন তারা ক্যাম্পে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে জল, শরবত, খিচুড়ি খেয়ে ফের আবার পায়ে হেঁটে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন।" 

    তৃণমূল বিধায়ক বলেন," আমি নিজে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু ভারতের সংবিধান প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজস্ব ধর্মাচরণ করার স্বাধীনতা দিয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও বারবার বলেছেন 'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার'।" 

    তিনি বলেন ,"তাই শ্রাবণ মাসে যে সমস্ত হিন্দু পুণ্যার্থীরা শিবের মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছেন তাদের সাহায্য করতে পেরে আমি নিজে গর্বিত বোধ করছি। মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। এই জেলাতে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা একে অন্যের উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুর্শিদাবাদ জেলার বহমান এই ঐতিহ্যের শরিক আমি নিজেও। তাই হিন্দুদের উৎসবে আমিও অংশগ্রহণ করেছি।"

    তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন -শনিবার থেকে পুণ্যার্থীদের জন্য জল, শরবত এবং খিচুড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। যা আজও চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন।।
  • Link to this news (আজকাল)