তাজপুরে মহিলা রেঞ্জারকে ‘হুমকি’: ‘মানুষের পাশে দাঁড়াতেই…’ সাফাই অনুতপ্ত মন্ত্রীর
প্রতিদিন | ০৪ আগস্ট ২০২৪
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলা রেঞ্জারের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহারে’ অনুতপ্ত কারামন্ত্রী অখিল গিরি। মহিলা আধিকারিককে ‘হুমকি’ দেওয়ার পর তিনি দুঃখ পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। যদিও পুরো বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীর সাফাই, ওই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল বলেই মনে হয়েছিল তাঁর।
শনিবার তাজপুরে বনদপ্তরের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানে উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলেন কাঁথির রেঞ্জার মণীষা শ-সহ বনদপ্তরের কর্মীরা। অভিযোগ, উচ্ছেদে বাধা দেন রামনগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি। রেঞ্জারকে হুমকি দিতেও শোনা যায় তাঁকে। মন্ত্রীর এহেন ব্য়বহার ঘিরে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয় বিভিন্ন মহলে। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর ‘অনুতপ্ত’ মন্ত্রী অখিল গিরি বললেন, “আমি রাগান্বিত হয়ে উত্তেজিতভাবে যে কথা বলেছি সেটা অনুচিত। একজন আধিকারিককে যে কথা বলেছি সেটা আমার উচিত হয়নি। আমি একজন মন্ত্রী হিসেবে আধিকারিককে এমন কথা বলে পরে দুঃখ পেয়েছি। আমি এই ধরনের কথা বলার জন্য অনুতপ্ত কিন্তু আমি মনে করি ওই এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার উচিত ছিল।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পরিস্থিতি আমি যদি না হাতে নিতাম তাহলে অন্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে যেত ওখানে।” রবিবার সকাল থেকে কার্যত থমথমে তাজপুরের ওই এলাকা। তবে বনদপ্তরের তরফ থেকে রাতভর ওই এলাকায় পাহারা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্রসৈকত তাজপুরে বনদপ্তরের জমিতে বেআইনিভাবে বহু হকার দীর্ঘদিন ধরে বসে রয়েছে। এই সমস্ত হকারদের জন্যই একদিকে যেমন পরিবেশ ও সৈকতভূমির ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই পর্যটকরা সমুদ্র উপকূলকে উপভোগ করতে পারছেন না। মাসখানেক আগে নবান্নে বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যের সর্বত্র সরকারি জমিতে থাকা বেআইনি দখলদারদের সরিয়ে দিতে হবে। বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে মাথায় রেখে এদিন সমুদ্র উপকূলে বনদপ্তরের জমি থেকে হকারদের জবরদখল সরিয়ে নিতে বলেন কাঁথির রেঞ্জ অফিসার মনীষা শ। খবর পেয়ে জেলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি হকারদের সমর্থনে পৌঁছে ওই মহিলা ফরেস্ট অফিসারের উদ্দেশে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
কারামন্ত্রীর রোষের মুখে পড়া মহিলা আধিকারিককে ফোন করে ‘নির্ভয়ে কাজ করা’র পরামর্শ দেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। মন্ত্রিসভার সহকর্মীর এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করে বনমন্ত্রী বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত সরকারি জমি বেদখল অভিযানে কর্মরত সরকারি অফিসারকে এভাবে বলে উনি (কারামন্ত্রী) ঠিক করেননি। গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব।” দপ্তরের মন্ত্রীর ফোনের পাশাপাশি ওই অফিসারকে ফোন করে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, “কারামন্ত্রীর এই আচরণ তৃণমূল কংগ্রেস অনুমোদন করে না। তাঁর আচরণ-মুখের ভাষা প্রতিবাদযোগ্য।”