জিএসটি দুর্নীতি বন্ধে রাজ্যে আজ শুরু আধার যাচাই পর্ব
বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ, সোমবার থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হচ্ছে জিএসটির আধার যাচাইকরণ। যেসব শিল্প সংস্থা বা ব্যবসায়ী জিএসটির জন্য আবেদন করবেন, তাঁদের জন্য শর্তসাপেক্ষে এই নিয়ম চালু হচ্ছে। তবে যে সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই জিএসটি রেজিস্ট্রেশন নিয়ে রেখেছে, তাদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। গোটা প্রক্রিয়াটি কার্যকর করতে রাজ্য অর্থদপ্তরের আওতাধীন জিএসটি অফিসারদের প্রশিক্ষণপর্ব শেষ হয়েছে। বিভাগীয় কর্তাদের কথায়, দেশজুড়ে জিএসটি প্রতারণা লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। ভুয়ো সংস্থা খুলে জিএসটিতে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গেও জাঁকিয়ে বসেছে এই জালিয়াতি। তাতে রাশ টানতেই জিএসটির আধার যাচাইয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। রাজ্য কমার্শিয়াল ট্যাক্সেস-এর কমিশনার দেবীপ্রসাদ কারনাম জানিয়েছেন, এই কাজের জন্য তাঁরা রাজ্যে ৩২টি জিএসটি ফেসিলিটি সেন্টার বা সুবিধাকেন্দ্র চালু করছেন।
জিএসটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের জন্য বেশ কিছু নথি জিএসটি সংক্রান্ত পোর্টালে জমা করা বাধ্যতামূলক। নথিগুলি খতিয়ে দেখবে অর্থদপ্তর। ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং রিস্ক প্যারামিটারের ছাঁকনিতে ফেলে দেখা হবে আবেদনগুলি। সেখানে যে আবেদনগুলি নিয়ে আধিকারিকদের প্রশ্ন থাকবে, সেই সংস্থা বা ব্যক্তিকে আধার যাচাইকরণের জন্য ডাকা হবে জিএসটি সুবিধাকেন্দ্রগুলিতে। এ সংক্রান্ত একটি লিঙ্ক যাবে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর কাছে। সেই লিঙ্ক থেকে সুবিধাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় বেছে নিতে পারবেন তিনি। এখন যেভাবে পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টনমেন্ট পাওয়া যায়, সেই ধাঁচেই সময় মিলবে। আবেদনে সংস্থার যে ডিরেক্টর বা মালিকের স্বাক্ষর থাকবে, তিনিই আসবেন সুবিধাকেন্দ্রে। না এলে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন মিলবে না। সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস-এর তথ্য বলছে, আধার যাচাইকারণের জন্য ১৫ দিন সময় পাবেন আবেদনকারী। সুবিধাকেন্দ্রে আসার সময় আধার, প্যান, অ্যাপয়েন্টমেন্ট সংক্রান্ত ই-মেলের কপি এবং আবেদনের সময় আপলোড করা নথিগুলি সঙ্গে আনতে হবে আবেদনকারীকে।
প্রসঙ্গত, ভুয়ো জিএসটি রেজিস্ট্রেশন ধরতে ২০২৩ সালের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তাতে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে ২৯ হাজার ২৭৩টি ভুয়ো সংস্থার হদিশ মিলে। এই সংস্থাগুলি ৪৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি জিএসটি প্রতারণা করেছিল। এর মধ্যে স্টেট জিএসটিতেই ১৫ হাজার ২৪০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়। বিপুল এই ক্ষতি এড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার আধার যাচাইকরণের পথে এগচ্ছে। এবার পশ্চিমবঙ্গেও সেই উদ্যোগ শুরু হল।