সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বিবাহবিচ্ছেদের পর সোশাল মিডিয়ায় এক যুবকের সঙ্গে আলাপ। মাত্র কয়েকদিনেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। মাসছয়েক লিভ ইনও করেন দুজনে। অবশেষে অবশ্য মাসতিনেক আগে বিয়ে হয় তাঁদের। তবে তরুণী পরিবারের দাবি, সম্পর্ক মোটেও স্বাভাবিক ছিল না। অশান্তি লেগেই থাকত দুজনের। রবিবার সকালে বজবজের বাঁখরাহাটের বাসিন্দা ওই বধূর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় জোর শোরগোল। মৃতার শ্বশুর ও স্বামী আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রাই। এলাকাবাসীর দাবি, খুনের পর দেহ লোপাটের চেষ্টা করছিল দুজনে। বজবজ ফাঁড়ির পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
বাসন্তী দাস মান্না নামে ওই তরুণী বিষ্ণুপুর থানার অন্তর্গত বাঁখরাহাটের বাসিন্দা। বছর পঁচিশের ওই তরুণী বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। দাম্পত্য অশান্তির জেরে প্রথমবার বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর। এর পর বাসন্তীর সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় বজবজ পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন্দদুলাল মান্না ওরফে নন্দুর সঙ্গে আলাপ হয়। নন্দু বজবজের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী। অল্প কয়েকদিন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় দুজনের। বাসন্তী ও নন্দদুলাল মাসছয়েক লিভ ইন করেন। বাসন্তীর পরিবারের অভিযোগ, লিভ ইন করার ফাঁকে বাসন্তীর পরিবারের কাছ থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন নন্দু। তবে বিয়ে করতে চাইছিলেন না বলেই অভিযোগ।
পরিবারের চাপে মাসতিনেক আগে নন্দদুলাল তাঁর প্রেমিকা বাসন্তীকে বিয়ে করেন। অভিযোগ, বিয়ের পরেও পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। মাঝে মাঝে নন্দদুলাল বাসন্তীকে বাড়ি থেকে বের করে দিত বলেও অভিযোগ। মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাসন্তী একাধিকবার স্থানীয় ক্লাব এবং বজবজ ফাঁড়িতে অভিযোগও করেন। যার জেরে বজবজ থানা নন্দুকে নোটিসও পাঠিয়ে থানায় তলব করেন। রবিবারও অশান্তি হয়। বাসন্তী স্থানীয় ক্লাব এবং ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ করেন। তবে তার পরেও শ্বশুরবাড়িতেই ফিরে যান।
স্থানীয় ক্লাবের যুবকদের দাবি, কিছুক্ষণ পরেই তাঁরা দেখেন নন্দু এবং তাঁর বাবা বাড়ি থেকে বাসন্তীর দেহ বার করার চেষ্টা করছে। তখনই স্থানীয়রা তাঁদের হাতেনাতে পাকড়াও করে। বাসন্তীকে বজবজ পৌর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানান বাসন্তী মৃত। স্থানীয়রাই নন্দু ও তার বাবাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রাতেই বাসন্তীর পরিবারের তরফে বজবজ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করে। বজবজ থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। নন্দু এবং তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।