সর্বনাশা 'রিসল নেশা'। বিপদ বুঝেও জনপ্রিয় হওয়ার লোভে স্রোতের মধ্যেই ক্যামেরা হাতে নেমে পড়েছিল যুবক। কিন্তু, স্রোতের মধ্যে ভেসে গেল সে। রবিবার ৪টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর উত্তর ভাগ পাম্পিং স্টেশনে। নিখোঁজ ওই কিশোরের নাম মহম্মদ নাসিম (১৪)। তার বাড়ি বারুইপুরেরই মল্লিকপুরে। সোমবার ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।জানা গিয়েছে, সংরক্ষিত এলাকায় লুকিয়ে রিলস বানাতে যায় ওই কিশোর। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, উত্তরভাগ পাম্পিং স্টেশনে মাঝে মধ্যেই এই ধরনের রিলস প্রেমীরা ‘উৎপাত’ চালান। তাঁদের বারংবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও। কিন্তু, তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভা, রাজপুর সোনারপুর, বারুইপুর এমনকী উত্তর ২৪ পরগনার একটা অংশের জল এই উত্তরভাগ পাম্পিং স্টেশন হয়ে বিদ্যাধরী ও মাতলা নদীতে গিয়ে পড়ে। জমা জল পাম্পিং স্টেশন হয়ে খালে পড়ার সময় বিরাট স্রোতের সৃষ্টি হয়। তা দেখতেই অনেকে ভিড় জমান।
সূত্রের খবর, রবিবার এই দৃশ্য দেখতে এবং রিলস ভিডিয়ো তৈরি করার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন মহম্মদ নাসিম। সেই সময়ই জলের স্রোতে ভেসে যায় সে। বাকি বন্ধুরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। রবিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারুইপুর থানার পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক বিভাস সর্দার। নিখোঁজের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
সোমবার ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এ দিন পুলিশ তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাচ্ছে। নাসিমের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, সাঁতার জানত না সে। রিলসের প্রবল নেশা ছিল তার। তবে তার জন্য যে জীবন চলে যাবে, তা ভাবতেও পারেনি পরিবারের লোকজন।
তরুণ প্রজন্মের রিলসের নেশা নিয়ে অতীতে একাধিক বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক বলেন, 'এই এলাকা ঘুরতে আসার জায়গা নয়। নিরাপত্তারক্ষীরা রয়েছেন। কিন্তু, ১০০-১৫০ মানুষ যদি সমস্ত নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দেন সেক্ষেত্রে মুশকিল। সাধারণ মানুষ যদি পর্যাপ্ত সচেতন থাকেন সেক্ষেত্রে এই ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব।'