• রাস্তা কোথায়? যাতায়াতে স্পিড বোটই ভরসা প্লাবিত কাটোয়ায়
    এই সময় | ০৫ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়, কাটোয়া: ফোড়ে নদীতে জল বাড়ায় আগেই প্লাবিত হয়েছিল কাটোয়া ১ ব্লকের বেশ কিছু এলাকা। এবার ব্রহ্মাণী নদীরও জলস্তর বাড়ায় প্লাবিত হলো কাটোয়া ২ ব্লকের বহু এলাকা। কাটোয়ার শ্রীরামপুর গ্রাম পুরোপুরি জলমগ্ন। পরিস্থিতি এমন যে, বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে স্পিড বোটে। অন্য দিকে, জলমগ্ন শিমুলগাছি থেকে ৩০টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একটি স্কুলে।দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি ব্রহ্মাণী ও ফড়ে নদীর। ফলে এই সব নদীর নাব্যতা নেই বললেই চলে। বর্ষা ছাড়া বছরের বাকি সময়ে দুই নদীর চেহারা হয় নালার মতো। এখন প্রবল বৃষ্টিতে এই নদীগুলো ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কাটোয়া ১ ব্লকের আলমপুর অঞ্চলের গাফুলিয়া, গোয়ালপাড়া, করজগ্রাম অঞ্চলের বাঁধমুড়ো, শ্রীরামপুর সম্পূর্ণ জলের নীচে।

    প্লাবিত এলাকায় কোথাও জলে ডোবা গাছের শুধু মাথাটুকু দেখা গিয়েছে। পাকা দোতলা বাড়িও জলে ঘেরা। প্লাবিত হয়েছে কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ অঞ্চলের শিমুলগাছি, কড়ুই অঞ্চলের পাঁজোয়া, নতুনগ্রামও। কাটোয়া ২ ব্লকের বিডিও স্পিড বোটে প্লাবিত এলাকা ঘুরেছেন৷ শিমুলগাছি এলাকা থেকে ৩০ জনকে উদ্ধারের পাশাপাশি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সেখানে।

    কিন্তু রবিবার বিকেল পর্যন্ত শ্রীরামপুর গ্রামে প্রশাসনের ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। কাটোয়ার মহকুমাশাসক অর্চনা পনধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, ‘ত্রাণ সব জায়গাতেই পাঠানো হয়েছে৷ আমি নিজে এলাকা ঘুরেছি।’

    এমন পরিস্থিতিতে অসহায় বোধ করছেন রোগীর পরিজন। শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা রুম্পা ঘোষ বলেন, ‘আমার বাবা হার্টের রোগী৷ তাঁর দু’বেলা চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু গ্রামের চারদিকে শুধুই জল। আমরা এখন বন্দি। প্রশাসন গ্রামে মেডিক্যাল টিম পাঠায়নি৷’ আর এক বাসিন্দা তপন পাল বলেন, ‘বিধায়ক আমাদের চাল, ডাল, মুড়ি পাঠিয়েছেন। কিন্তু ব্লক প্রশাসন আমাদের গ্রামে একবারও আসেনি৷’

    ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সন্তু মণ্ডল বলেন, ‘রাস্তা, স্কুল সব জলের নীচে। গ্রামে কেউ অসুস্থ হলেও চিকিৎসার জন্য কোথাও যাওয়ার উপায় নেই৷ স্পিড বোটে যেতেও বেশ সময় লেগে যাচ্ছে৷’ বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গ্রামে সাপের উপদ্রব শুরু হয়েছে৷ তাঁদের জলবন্দি দশা কবে ঘুচবে তা বুঝতে পারছেন না কেউ।

    কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি ত্রাণ পাঠিয়েছি ওই গ্রামগুলোয়। স্পিড বোট ও নৌকার ব্যবস্থা করেছি। তবে বিডিও-র গ্রামে যাওয়া উচিত ছিল৷’ অন্য দিকে, কুলগাছি গ্রামের বহু বাসিন্দাকেও স্কুলে উদ্ধার করে রাখা হয়েছে৷ ওই গ্রামেরও বেশির ভাগ বাড়িতে জল ঢুকেছে৷

    এদিকে অজয়েরও জল বাড়তে শুরু করেছে। কাটোয়ার শাঁখাইঘাটে প্রায় কানায় কানায় বইছে অজয়। স্রোতের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি পারাপার।
  • Link to this news (এই সময়)