• ঋণের টাকা ফেরত চাওয়ায় ছুরির কোপ, খুন ব্যাঙ্ককর্মীই
    বর্তমান | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: ঋণ নিয়েছিল গ্রাহক। কিন্তু, ঠিকমতো পরিশোধ করছিল না। তাই  ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন ব্যাঙ্ককর্মী। সেই তাগাদার কারণেই গ্রাহকের হাতে নৃংশসভাবে খুন হতে হল ওই ব্যাঙ্ককর্মীকে! সোমবার বিকেলে রাজারহাটের কাজিয়াল এলাকায় ব্যাঙ্কের সামনেই প্রকাশ্য ঩দিবালোকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় হতবাক এলাকার বাসিন্দারা। সহকর্মীরা ব্যাঙ্ক থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস জানিয়েছে, মৃত ব্যাঙ্ককর্মীর নাম প্রসূন বিশ্বাস (৩০)।  এই ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রাহককে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিস। ধৃতের নাম মহম্মদ কবীর। তার বাড়ি রাজারহাটের রাইগাছি এলাকায়।

    বিধাননগরের ডেপুটি পুলিস কমিশনার (নিউটাউন) মানব সিংলা বলেন, দ্রুত ঋণ পরিশোধ করতে বলায় খুন বলেই জানা গিয়েছে। তদন্ত চলছে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজারহাট থানার কাজিয়াল পাড়ায় সিনেমা হলের গলিতে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ঋণ প্রদানকারী শাখা রয়েছে। সেই শাখাতেই কর্মরত ছিলেন প্রসূনবাবু। ওই প্রদানকারী শাখার  ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ঋণের যাবতীয় কিছু তিনিই দেখভাল করতেন। ধৃত মহম্মদ কবীর ওই শাখা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। পরিশোধ করা নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রসূনবাবুর বচসাও হয়েছিল। এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ মহম্মদ কবীর ওই ব্যাঙ্কের শাখার কাছে যায়। ফোন করে প্রসূনবাবুকে সে বাইরে ডাকেন।

    ফোন পেয়ে প্রসূনবাবু অফিস থেকে বেরিয়ে বাইরে আসেন। তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করেই এসেছিল কবীর। তাই তিনি আসতেই ধারালো ছুরি বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ে কবীর। ছুরি দিয়ে প্রসূনবাবুকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। পেটে ও বুকে একাধিক ক্ষত তৈরি হয়। ওই অবস্থায় প্রাণে বাঁচতে প্রসূনবাবু প্রতিরোধ করেন। দু’জনের ধস্তাধস্তিও হয়। যাতে কবীরের হাতে ও পায়ে আঘাতও লাগে। প্রসূনের চিৎকার শুনে শাখার সহকর্মী বেরিয়ে এসে দেখেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। এদিকে, অভিযুক্ত কবীর ঘটনাস্থল থেকে নিজেই রাজারহাট থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তারপর পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে।

    অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে খুনের তদন্তও শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করছে পুলিস। ধৃত কবীর প্রাথমিক জেরায় পুলিসকে জানিয়েছে, ওই শাখা থেকে যে ঋণ নিয়েছিল, তার জন্য প্রতি সপ্তাহে ১১৬০ টাকা করে কিস্তি শোধ করতে হতো। কবীরের দাবি, কিস্তি প্রায় শেষের দিকে। এক সপ্তাহ দিতে না পারায় প্রসূনবাবু তাকে চাপ দিচ্ছেলেন। গালিও দেন বলে সে দাবি করেছে। তারপরই প্রসূনবাবুকে খুনের পরিকল্পনা করে সে। বাজার থেকে নতুন ছুরি কিনে হাজির হয়েছিল সে। তার দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)