বাংলাদেশের পালা বদলের আঁচ মালদার মহদিপুর সীমান্তে দাঁড়িয়ে দিব্যি টের পাওয়া গেল। এ পারে দাঁড়িয়ে দেখা ও শোনা যাচ্ছিল ও পারের সোনা মসজিদ স্থলবন্দরে বিজয় মিছিল থেকে বাজি ফাটানো, আবার একেবারে সীমান্তের জ়িরো পয়েন্টের কাছেই থাকা আওয়ামি লিগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের শব্দ।সীমান্ত পেরিয়ে আসা যাত্রীদের চোখেমুখে ছিল স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। গত কয়েকদিন মহদিপুর স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াত প্রায় বন্ধই ছিল। সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই শিবগঞ্জ। আদি চমচম নামে একটা মিষ্টির জন্য বিখ্যাত সেই এলাকা।
সেই মিষ্টির কারিগর মোনা সিংহ এ দিন সন্ধ্যার মুখে ভারতে ঢুকে বললেন, 'মালদায় চিকিৎসা করাতে এলাম। কিন্তু দেশে অবস্থা খুব খারাপ। দেখলাম শিবগঞ্জ বাজারে আওয়ামি লিগের অফিস পুড়িয়ে দিল, রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বলছে।'
বেলা ৩.২০ নাগাদ ও পারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সতর্কবার্তা পেয়ে এপার থেকে পণ্য পাঠানো বন্ধ হয়। ততক্ষণে ১৪২টি ট্রাক ও পারে চলে গিয়েছে। সন্ধ্যায় সীমান্ত বন্ধ হওয়ার আগে অবশ্য ৮৯ জন ট্রাক চালক ট্রাক রেখেই ফিরে আসেন।
দুপুর দুটো নাগাদ হাসিনা সরকারের পতনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তেও যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। সীমান্তের এ পার থেকেই দেখা যায় উত্তেজিত জনতা ও পারের একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। বেশ কিছু জায়গায় ভাঙচুরও চালায় তারা।
বিএসএফ সঙ্গে সঙ্গে চেকপোস্ট বন্ধ করে দেয়। সীমান্তে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থেকে জেলা পুলিশ সুপার-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা হিলি ছুটে আসেন। সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল।