• চায়ের চুমুকে আমের মজা...বাজারে এল ‘ম্যাঙ্গো টি’
    এই সময় | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • পিনাকী চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার

    কনভেনশনাল চায়ের অ্যারোমায় আর মন ভরছে না জেন জ়ি-র। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে চা নিয়ে নিত্যনতুন এক্সপেরিমেন্ট ছাড়া আর গতি নেই। এ বার আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা-বাগানের উদ্যোগে গ্রিন টি-র সঙ্গে জুটি বাঁধল মালদার পৃথিবীবিখ্যাত সুগন্ধি আম ‘ল্যাংড়া’। দু’য়ের মিশ্রণে ওই চা-বাগান বাজারজাত করেছে ‘ম্যাঙ্গো টি’।আমসত্ত্ব থেকে আমপান্না কিংবা কোল্ড ড্রিংক- আমের ছোঁয়া মানেই মার্কেটে তা সুপারহিট। তবে এই প্রথম বাজারে এল ‘আম চা’। এমনই দাবি মাঝেরডাবরি চা-বাগান কর্তৃপক্ষের। দামটা অবশ্য সাধারণের নাগালের খানিকটা বাইরে। আপাতত এক কিলো ‘ম্যাঙ্গো টি’ বিক্রি করা হবে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দরে। সম্প্রতি লঞ্চ করা হয় এই বিশেষ ম্যাঙ্গো টি। সে দিন বাগানের টি-লাউঞ্জে হামলে পড়েছিলেন চা-প্রেমীরা।

    ঠিক কীভাবে তৈরি করা হচ্ছে, ম্যাঙ্গো টি?

    বাগান কর্তৃপক্ষ জানালেন, গ্রিন টি যে ভাবে তৈরি করা হয়, ওই একই প্রক্রিয়ায় হচ্ছে ম্যাঙ্গো টি। তবে ল্যাংড়া আমের স্লাইসকে জীবাণুমুক্ত করে ব্লেন্ড করা হচ্ছে উচ্চ মানের গ্রিন টি-র সঙ্গে। তাতেই চা-পানের সময় মিলছে চা ও আমের অ্যারোমাযুক্ত ফ্লেভার। সঙ্গে বাড়তি পাওনা আমের হালকা মিষ্টত্ব। চায়ের বুঝদাররা যদিও চায়ে চিনি মেশানোর কথা শুনলে আঁতকে ওঠেন।

    কিন্তু চিনি মেশানো চা খেতে অভ্যস্ত যাঁরা, তাঁদেরও এই চায়ে চিনি মেশানো বারণ। কারণ চায়ে আমের মিষ্টি তো রয়েইছে। এর পরে আবার চিনি মেশালে, প্রকৃত স্বাদে ঘাটতি আসবে বলে জানাচ্ছেন চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ওই চায়ে খুবই লো কন্টেন্ট সুগার থাকায়, তা ডায়াবেটিকদের কোনও ক্ষতিই করবে না। বরং গ্রিন টির ইমিউনিটির সঙ্গে আমের ফ্লেভার মেশার কারণে ‘ম্যাঙ্গো টি’ হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ‘হেল্থ টনিক’।

    তবে ম্যাঙ্গো টি তৈরি হওয়ার পরে মোটেও পাওয়া যাবে না লিকারের সেই চিরাচরিত রং। আসলে তার বেশির ভাগটাই দখলে চলে যায় ম্যাঙ্গো স্লাইসের। অর্থাৎ খয়েরির সঙ্গে হলুদ রং মিশে তৈরি হয় চায়ের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এক রং।

    মাঝেরডাবরি চা-বাগানের তৈরি করা ‘আম চা’-এর খবর শুধু ডুয়ার্সেই আটকে নেই। ইতিমধ্যে ওই চায়ের কীর্তি পৌঁছে গিয়েছে বিলেতের দরবারে। লন্ডন থেকে ‘আম চা’ রপ্তানির বড় বরাতও জুটে গিয়েছে।

    ইতিমধ্যেই হোয়াইট টি, ব্লু টি, রোজ টি ও মুনলিট টি তৈরি করে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক চায়ের বাজারে ছাপ ফেলেছে মাঝেরডাবরি চা-বাগান। এ বার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন ম্যাঙ্গো টি। চা-বাগানের জেনারেল ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, ‘যুগের রুচি ও চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে নতুন নতুন ভাবনাকে সামনে আনতেই হবে। সেক্ষেত্রে আমরা নতুন প্রজন্মের চাহিদাকে ভীষণ ভাবে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। সে জন্যই আমাদের নতুন সংযোজন ‘ম্যাঙ্গো টি’।’
  • Link to this news (এই সময়)