ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে, বইছে পুবালি বাতাসও। এ সব মানে তো তার মরশুম। রুপোলি শস্যের সময়। তবে এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত তার তেমন দেখা নেই। অন্তত সপ্তাহ খানেক আগে তো প্রায় ছিলই না। তবে গত ৬-৭ দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ইলিশ উঠেছে সব মিলিয়ে ২৪০-২৮০ টনের কাছাকাছি। যার বেশির ভাগই ৪০০-৭০০ গ্রামের। এক কেজি বা তার কাছাকাছি ওজনের ইলিশের পরিমাণ কম।
অগস্ট মাসের প্রথম ছ’দিন কেটে গেল। তার পরেও এই অবস্থার পরিবর্তন নেই। অথচ গত বছর ১৪ জুলাই ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ উঠেছিল হাজার টন। সে বার ওই একই দিনে দিঘায় ৫০ টন ইলিশ ওঠে। তার মধ্যে বেশ কিছু ইলিশই ছিল এক কেজি ওজনের বেশি। গত বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার গদখালিতে ২ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছিল। এ বার কোথায় কী?খারাপ আবহাওয়ার জন্য কিছু দিন সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল মৎস্যজীবীদের। তার পর, এখন ট্রলারগুলো ফের সমুদ্রে যেতে শুরু করেছে। এবং মৎস্যজীবীদের আশা, সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ রয়েছে, আগামী তিন-চার দিনেই তার প্রমাণ মিলবে। গত সপ্তাহে পাঁচ দিন যে পরিমাণ ইলিশ মিলেছে, সেটা মৎস্যজীবীদের আশার আলো দেখার অন্যতম কারণ।
তাঁদের কয়েক জনের ব্যাখ্যা, ‘ইলিশ ওঠার সিজ়ন এ বার একটু দেরিতে শুরু হলো। বর্ষা যেমন কয়েক বছর দেরিতে শুরু হয়, তেমন। অগস্ট, সেপ্টেম্বরের তুমুল বৃষ্টি অনেক সময়েই জুনের ঘাটতি মিটিয়ে দেয়। মনে হচ্ছে, এ বছর ইলিশও তেমন দেরিতে ঢুকল। একবার যখন শুরু হয়েছে, এ বার ইলিশ পাওয়া যাবে।’
সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতির সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘গত সপ্তাহের পাঁচ দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজ়ারগঞ্জ, রায়দিঘি এলাকায় সমুদ্র থেকে প্রায় ৪০ টন ইলিশ উঠেছে। এটাই আমাদের কাছে সুখবর। কারণ, ইলিশের জোগান সমুদ্রে বাড়ছে।’ পশ্চিমবঙ্গ সংগঠিত মৎস্যজীবী সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতির বক্তব্য, ‘ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ হলে ইলিশের জোগান যে বাড়বে, সেটা স্পষ্ট।’
তবে গত বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি ইলিশ বিপুল পরিমাণ ডায়মন্ড হারবারে এবং কিছু পরিমাণ দিঘায় ধরা পড়ার কিছু দিনের মধ্যেই রুপোলি শস্য সমুদ্র ও নদী থেকে যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল। গত বছরের ১৪ জুলাই ধরা পড়া ইলিশই বিভিন্ন বাজারে মিলেছিল বেশ কিছু দিন ধরে। ফের ইলিশের ঝাঁকের দেখা মেলে দুর্গাপুজোর কিছু আগে— তবে সেটা খুব বেশি নয়।