• জল ছাড়া কমাল ডিভিসি, ভাসছে হাওড়া-হুগলি
    এই সময় | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি কমায় সোমবার সকাল সাড়ে ন’টা থেকে ডিভিসি মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দিল। কিন্তু তার আগে ডিভিসি থেকে ছাড়া জলে ভাসতে শুরু করেছে গ্রামীণ হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুর। একই পরিস্থিতি হুগলির গোঘাট, খানাকুলেও।সোমবার ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে ৪৫ হাজার কিউসেকে নামিয়ে আনে। রবিবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমে এক লাখ কুড়ি হাজার থেকে ৭৫ হাজার হয়েছিল। ডিভিসির এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল) আঞ্জনি দুবে ‘এই সময়’কে বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত সারাদিন ধরে মাইথন থেকে ৬০০০ এবং পাঞ্চেত থেকে ৩৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া চলছে। নতুন করে ওই এলাকায় কোনও বৃষ্টি হয়নি।’

    তেনুঘাটের এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর পর্যন্ত দু’টি গেট বাদে বাঁধের সবক’টি গেট বন্ধ করা হয়েছে। কমানো হয়েছে জল ছাড়ার পরিমাণও। দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেটরি কমিটির সদস্য সচিব শশী রাকেশ বলেন, ‘তেনুঘাটে ৮৫৪ ফুট পর্যন্ত জল ধরে রাখা যায়। তার পর তা বিপদসীমা ছাড়ায়। কিন্তু রবিবার জলের উচ্চতা ৮৫৭ ফুট হয়ে যাওয়ায় তা ছাড়তে হয়েছিল। পাঞ্চেতের বিপদসীমা ৪২৫ ফুট। সেখানে সোমবারও প্রায় ৪১৭ ফুটের কাছাকাছি জল আছে।’

    তবে আগের ছাড়া জলেই বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেল গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে। সোমবার সন্ধ্যায় উদয়নারায়ণপুর ব্লকের হরিহরপুর শাসমলপাড়া-সহ কয়েকটি জায়গা থেকে নদীর বাঁধ উপচে জল এলাকায় ঢুকতে শুরু করে। তবে গ্রামের ভেতরে জল ঢোকেনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সন্ধ্যায় উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা, হাওড়ার জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি, অতিরিক্ত জেলাশাসক আজার জিয়া, উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক মানস কুমার মণ্ডল ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান।

    এ দিন দুপুর থেকেই দামোদরে জল বাড়তে থাকে। নদীর পাশে বসবাসকারী প্রায় ২২০০ মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দামোদর নদের উপরে রানি ভবশঙ্করী সেতুতে নদীর জলস্ফীতি দেখতে ভিড় করেন কয়েকশো মানুষ। উদয়নারায়ণপুর ব্লকের মনসুকা এলাকায় দামোদরের কংক্রিটের বাঁধের প্রায় একশো মিটার বসে গিয়েছে। মেগা প্রোজেক্টে এই বাঁধ তৈরি হয়েছিল। আমতা-১ ব্লকের দামোদর নদ সংলগ্ন রসপুর এলাকা থেকে বেশ কিছু পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    ডিভিসির ছাড়া জলে আরামবাগ মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে সোমবার। আরামবাগ ব্লকের পুরসভা এলাকাগুলিতে এখনই বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও গ্রামীণ এলাকার বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন। মুন্ডেশ্বরী ও দামোদরের জল বাড়ায় পুরশুড়ার বেশ কিছু এলাকা জলের তলায়। আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন স্কুল কলেজগুলিতে তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। প্রাইমারি স্কুলে পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। হুগলির জেলা শাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘বিডিও ও অন্যান্য আধিকারিকরা পরিস্থিতি নজরে রেখেছেন। ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সজাগ আছে।’
  • Link to this news (এই সময়)