• জ্বলছে ওপার বাংলা, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা বাংলাদেশিরা এপারে চিন্তায়
    প্রতিদিন | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতার যেমন পার্ক স্ট্রিট। ঠাটবাট আর আধুনিকতায় ঢাকার ধানমণ্ডি ঠিক ততটাই আধুনিক। সেই ধানমণ্ডির বাসিন্দা রফিকুর আলম ভর্তি কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে। সঙ্গে এসেছেন স্ত্রী আর দুই নাবালক ছেলেমেয়ে। রফিকুরের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। স্ত্রী ছেলে মেয়ে রয়েছেন পার্ক র্সাকাসে আত্মীয়ের বাড়িতে। ঠিক ছিল আগামী সপ্তাহে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু সোমবার সকালে টিভিতে দেশের আপডেট দেখে স্তম্ভিত! কী করবেন বুঝতেই পারছেন না রফিকুরের স্ত্রী। রফিকুর একটা উদাহরণ মাত্র।

    বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা-সহ বিভিন্ন জেলার রোগী ফি মাসেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে আসেন চিকিৎসার জন‌্য। স্বাস্থ‌্যভবনের প্রাথমিক তথ‌্য বলছে, কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কমবেশি ৩০০ রোগী চিকিৎসাধীন। এঁদের মধ্যে কেউ সবে ভর্তি হয়েছেন। কারও আবার কয়েকদিনের মধ্যেই ছুটি হবে। মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছেন বাড়ি ফিরতে। কিন্তু দেশের অবস্থা দেখে শরীর সুস্থ হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন রোগীর পরিজন।

    রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডা. কৌস্তভ নায়েক বলেছেন, ‘‘শুধু বাংলাদেশ নয়। নেপাল, ভুটান থেকেও কলকাতা তথা রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন‌্য রোগী আসেন। ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে কলকাতার উপহাই কমিশনার ঠিক করবেন তাঁরা কীভাবে দেশে ফিরবেন অথবা ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না।’’ কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতাল বাংলাদেশের রোগীদের কাছে অতিপরিচিত। কয়েক যুগ ধরে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা করছে এই হাসপাতাল। তবে এখন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেও প্রতিবেশী দেশের রোগাীরা আসেন। চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে যান।

    পিয়ারলেস হাসপাতালের মেডিক‌্যাল সুপার ডা. সিঞ্চন ভট্টাচার্যর কথায়, ‘‘ফি মাসে নানাবিধ রোগী ভর্তি হন। হাসপাতালের তরফে পড়শি দেশের রোগীর আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাদের যদি কোনও প্রয়োজন হয় সাধ‌্যমতো চেষ্টা করা হবে।’’ তবে সিঞ্চনও বলেছেন, ‘‘গোটাটাই পররাষ্ট্রমন্ত্রক ও উপহাই কমিশনারের মধ্যের বিষয়। আমাদের কিছুই করার নেই।’’ কলকাতা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি অ‌্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে গত তিন বছর ধরে একটি পরিবার তাঁদের সন্তানের চিকিৎসার জন‌্য আসেন। হাসপাতালের উপাধ‌্যক্ষ ডা. অঞ্জন অধিকারীর কথায়, আপাতত তিনজন রোগী ভর্তি আছে। চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হওয়ার পর তাঁরাই ঠিক করবেন কী করতে চান? আমাদের কাজ ভিসা ও সংশ্লিষ্ট পরিচয়পত্র দেখে চিকিৎসা করা।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)