এই সময়: বন দপ্তরের মহিলা পদাধিকারিকের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে কারামন্ত্রীর পদ থেকে রবিবার ইস্তফা দিয়েছেন অখিল গিরি। সোমবার বিধানসভায় অখিল গেলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি দেখা করার সুযোগ পাননি। ফলে মুখ্যসচিবের কাছেই ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন অখিল। রবিবার অখিল বলেছিলেন, ই-মেলে ইস্তফাপত্র পাঠানোর পাশাপাশি বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেবেন।যদিও রামনগরের বিধায়কের সেই ইচ্ছেপূরণ হয়নি। তবে মন্ত্রিত্ব যাওয়ায় কোনও খেদ নেই বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন কারামন্ত্রী। সোমবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, 'মন্ত্রিত্ব গিয়েছে বলে কোনও দুঃখ নেই। ক্ষমা চাইতে হলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই ক্ষমা চাইব। অন্য কারও কাছে ক্ষমা চাইব না।'
বিধানসভায় গেলেও অধিবেশন কক্ষে এ দিন প্রবেশ করেননি অখিল। তিনি বিধানসভায় মুখ্য সচেতকের কক্ষেই বসেছিলেন। পরে বিধানসভায় অন্য একটি কক্ষে কিছুক্ষণ বসে থাকেন। এ দিকে, তাজপুরের যে ঘটনাকে ঘিরে অখিল মন্ত্রিত্ব খোয়ালেন, সেই ঘটনা নিয়ে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট দেবেন। কারামন্ত্রীর পদ থেকে অখিল ইস্তফা দেওয়ায় এই দপ্তর আগামী দিনে কার হাতে যাবে, তার কোনও ইঙ্গিত অবশ্য এ দিন পাওয়া যায়নি।
সাধারণত এই ধরনের পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থাকে অথবা মুখ্যমন্ত্রী অন্য কোনও মন্ত্রীকে বাড়তি দায়িত্ব দেন। আগামী দিনে কারা দপ্তর কার হাতে যাবে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হওয়ার পাশাপাশি রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়টি রাজভবনের ছাড়পত্র না পাওয়ায় আটকে রয়েছে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ব্যারাকপুর লোকসভা থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
আগামী দিনে তাঁকে সেচমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে হবে। পার্থর জায়গায় নতুন কেউ সেচমন্ত্রী হতে পারেন। এছাড়া আরও একজন নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন। মন্ত্রিসভায় এই রদবদলের জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে গত ১০ জুলাই রাজ্য সরকারের তরফে বার্তা পাঠানো হলেও এখনও রাজভবন নীরব রয়েছে।
মন্ত্রিসভায় নতুন কোনও মুখকে মন্ত্রী করতে গেলে রাজ্যপাল তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন— এটাই সাংবিধানিক বিধি। রাজভবন এই বিষয়ে গড়িমসি করতে থাকায় বিরক্ত নবান্ন। নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানো নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের সংঘাত হয়েছে কিছুদিন আগেই। এবার মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়েও সংঘাতের সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।