• ২৬ হাজারের মধ্যে অযোগ্য ১ হাজার ২১২
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি: চাকরি বাতিলের মামলায় যোগ্য-অযোগ্য বেছে দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার কারা অযোগ্য? তা সুপ্রিম কোর্টকে বেছে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। এমনকী, তাদের নাম, রোল নম্বর-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিয়েছে এসএসসি। সোমবার অযোগ্যদের প্রাথমিক তালিকা হলফনামার আকারে সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছে এসএসসি। এবার সুপ্রিম কোর্ট এই হলফনামার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার।

    কি জানানো হয়েছে সেই তালিকায় ?

    এই মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে যে তথ্য পেশ করা হয়েছে, সেখানে জানানো হয়েছে যে, সব মিলিয়ে অর্থাৎ চারটি বিভাগ মিলিয়ে মোট ১ হাজার ২১২জন নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকরি পেয়েছেন। অর্থাৎ এসএসসি-র তরফে জানানো হয়েছে, সব মিলিয়ে ১ হাজার ২১২জনের নিয়োগে অনিয়ম রয়েছে।

    সংশ্লিষ্ট হলফনামায় আরও বলা হয়েছে যে, এদের মধ্যে কারোর নামই এসএসসি সুপারিশ করেনি। এসএসসির তরফে চারটি বিভাগে কোথায় কতজন অযোগ্য, তার তালিকা সুপ্রিম কোর্টের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকী, তাদের নাম, রোল নম্বর-সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিয়েছে এসএসসি।

    এবার দেখা যাক কোন বিভাগে কত জন এই তালিকার রয়েছেন?

    এসএসসি-র তরফ সুপ্রিম কোর্টে যে হলফনামা পেশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে গ্রুপ সি বিভাগে সব মিলিয়ে ৩৮১জন বেআইনিভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। এমনকী, এদের মধ্যে কতজন মেধা তালিকায় যোগ্যদের বঞ্চিত করেছেন, তার তালিকাও পেশ করা হয়েছে। বঞ্চিতদের তালিকায় রয়েছেন ১৩২ জন। সংশ্লিষ্ট হলফনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্যানেলের বাইরে থেকে মোট ২৪৯ জন চাকরি পেয়েছেন।

    শুধু তা-ই নয়, গ্রুপ ডি নিয়োগে কতজন অনিয়ম করে চাকরি পেয়েছিলেন, তার তালিকাও পেশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে সব মিলিয়ে অনিয়ম করে চাকরি পেয়েছেন ৬০৮জন। একইসঙ্গে প্যানেলে নাম না-থাকা সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছেন ৩৭১জন। এমনকী, ২৩৭জনকে মেধাতালিকায় এগিয়ে রাখা হয়েছিল। তাদেরকেও অবৈধভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।

    ওদিকে ফলকনামায় আরও জানানো হয়েছে যে, নবম ও দশম শ্রেণিতেও প্যানেলের বাইরে থেকে এবং কিছুজনকে মেধাতালিকায় ওলটপালট করে নিয়োগ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে নবম ও দশম শ্রেনির নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৮৫জনের বেআইনিভাবে চাকরি হয়েছে। তার মধ্যে ৭৪জনকে প্যানেলের তালিকা ওলটপালট করা হয়েছে। আর ১১১জনকে প্যানেলের বাইরে থেকে নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি হলফনামায় জানা যাচ্ছে, একাদশ এবং দ্বাদশে অযোগ্যের সংখ্যা ৩৮ জন এবং প্যানেলের বাইরে ১৮ জন।

    অন্য দিকে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফেও  আদালত সওয়াল করা হয়েছে। পর্ষদের  দাবি, যেকোনও পরীক্ষার্থীকে তখনই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়, যখন এসএসসি তার নাম সুপারিশ করে। পর্ষদ জানিয়েছে, এসএসসি’র দেওয়া তথ্য ছাড়া কোনও কিছুর উপরেই নির্ভর করা হয় না। সেক্ষেত্রে পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, এসএসসি’র সুপারিশের ভিত্তিতেই তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। তারা নিজেরা কিছু করেনি। এর পাল্টা এসএসসি হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল যে, সুপারিশ ছাড়াও নিয়োগ করা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, সব মিলিয়ে ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত এই মামলা। এসএসসি নিয়োগ মামলায় ২৬০০০জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশের ঘটনায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছিল অনেকের মাথায়। তবে শেষ পর্যন্ত এখনও তারা চাকরি করছেন। তবে এবার চাকুরিরতদের মধ্যে প্রকৃত অযোগ্য কারা, তারই তালিকা সুপ্রিম কোর্টে জমা দিল এসএসসি।

  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)