• 'দেশে কবে কীভাবে ফিরব?' দুশ্চিন্তায় কলকাতায় চিকিত্‍সা করাতে আসা বাংলাদেশিরা!
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • অয়ন ঘোষাল:  বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। বাংলাদেশে অন্তর্বতী সরকার গঠনের তোড়জোড়। রাষ্ট্রপতি ও সেনার তত্ত্বাবধানে তৈরি হবে সরকার। আজ থেকে বাংলাদেশে খোলা স্কুল-কলেজ, অফিস। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর কড়া সতর্কতা। বাড়ল জওয়ানের সংখ্যা। দু-দেশের বাণিজ্য কার্যত বন্ধ।এমতাবস্থায় দেশে ফেরা নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় এবং আতান্তরে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাদের পরিজন।

    মুকুন্দপুর এলাকার সোনালি পার্ক। সব মিলিয়ে ৩৮ টি গেস্ট হাউস। সেখানে সাড়ে তিন থেকে পৌনে চার হাজার বাংলাদেশী নাগরিক আছেন। এরা কেউ চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়েছেন ১ মাস আগে। কেউ ১৫ দিন। কেউ বা মাত্র ৫ দিন আগে। এরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা পরিস্থিতি দেখে দেশ ছেড়ে বেড়িয়েছেন। তারপর ক্রমশ পাল্টে যাওয়া পরিস্থিতির আঁচ পেয়েছেন দেশে আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের ফোন করে। মাঝে মাঝে যোগাযোগ করতে পেরেছেন। কখনও বা পারেননি।

    যদিও বৈধ ভিসা থাকলে পেট্রাপোল-সহ সমস্ত সীমান্ত দিয়েই যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইন্দো-বাংলা ট্রেন বন্ধ। বিমান অনিয়মিত। সড়ক পথে বাসে যাত্রা ঘিরেও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এদেরই একজন আয়েশা সিদ্দিকী। রংপুর জেলার বাসিন্দা। ১৫ জুলাই দেশ ছেড়েছেন। তখনও সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এখানে একটি বড় বেসরকারি হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন সন্তান সম্ভবা আয়েশা। যদিও ভিসা আছে নভেম্বর পর্যন্ত। তার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তাঁর আশা। 

    গাজীপুর জেলা থেকে ১ অগাষ্ট কলকাতায় ইন্টারন্যাশনাল পারমিট অ্যাপ ক্যাব বুক করে এসেছেন ৫৬ বছরের নজরুল ইসলাম। আছেন সোনালি পার্কের এক গেস্ট হাউসে। পরশু পায়ের অপারেশন হয়েছে। আজ দুপুরে অ্যাপ ক্যাবেই দেশে ফেরার কথা। সীমান্তের কি অবস্থা জানেন না। কারুর থেকেই সঠিক খবর পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় ক্যাব বুক করে সীমান্ত পর্যন্ত গিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন নিজের দেশে? বুঝতে পারছেন না। 

    কাজী মতলব করিম। চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা। স্ত্রী অসুস্থ। তাকে নিয়ে প্রায় ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়েছিলেন। আরও কিছুদিন লাগবে চিকিৎসায়। তারপর? কি হবে? ওপরওয়ালা যা ভালো বুঝবেন তাইই হবে, বলছেন করিম। যা ঘটল সেটাই ভালো নাকি দেশে যা পরিস্থিতি ছিল সেটাই ভালো ছিল? করিমের উত্তর, যাইই ঘটুক নিজের সমস্যা নিজেকেই সামাল দিতে হবে। সোনালি পার্ক এলাকায় দীর্ঘ ২১ বছর ধরে গেস্ট হাউস চালান ৬০ বছরের হিমাংশু মৃধা। যারা রয়ে গেছেন তারা ছাড়া গত ১০ - ১২ দিন ধরে আর কেউ আসছেন না। লাটে উঠেছে গেস্ট হাউসের ব্যবসা। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)