• উত্তাল সময়ে ভারত থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন বাংলাদেশিরা! চিন্তায় কলকাতার পর্যটন ব্যবসায়ীরা
    প্রতিদিন | ০৬ আগস্ট ২০২৪
  • স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় দুমাস ধরে বাংলাদেশে চলা আন্দোলনের জেরে ট্রাভেল ও হোটেল ব‌্যবসা জোর ধাক্কা খেয়েছে। একের পর এক বাসের বুকিং বাতিল করতে হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনে পর ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তগুলি সিল করে হয়েছে। বাতিল হয়েছে উড়ান। নিউ মার্কেট এলাকায় হোটেল ও টু‌র-ট্রাভেল ব‌্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও বাড়ছে। বাস ও উড়ানের অগ্রিম টিকিটের টাকা চেয়ে একের পর এক ফোন আসছে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে।

    সারা বছরই বাংলাদেশ থেকে প্রচুর নাগরিক ভারতে আসেন। অধিকাংশ আসেন চিকিৎসা করাতে। বাকি ব‌্যবসায় সংক্রান্ত কাজে ও ভ্রমণের জন‌্য। বাংলাদেশিরা এদেশে এলে তাঁদের ঠিকানা হয়ে ওঠে নিউমার্কেট এলাকার সদর স্ট্রিট, মারকুইস স্ট্রিট। এখানে হোটেল, পরিবহণ ব‌্যবসা পুরোটাই বাংলাদেশি রোগী ও পর্যটকদের উপরই নির্ভর করে চলছে। হঠাৎ করে বাংলাদেশে পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে ওঠা ও হাসিনা সরকারের পদত‌্যাগের আঁচ এসে পড়েছে মারকুইস স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটে। সদর স্ট্রিটে বেঙ্গল ট্রাভেল সার্ভিস-এর প্রোপ্রাইটার মহম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশিদের উপর নির্ভর করে চলে আমাদের ব‌্যবসা। সে দেশে আন্দোলন শুরু হতেই টিকিট বুকিং কমে গিয়েছিল। অনেকে অগ্রিম বুকিং করেও বাতিল করে দিয়েছে। প্রায় ৬০ শতাংশ ব‌্যবসা মার খেয়েছে। পর্যটক বুকিং তো একদমই ছিল না। বাংলাদেশি রোগীদের জন‌্য কিছু বুকিং হচ্ছিল। কিন্তু এখন সে দেশের সঙ্গে সব যোগাযোগ ব‌্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাস, উড়ান সব বাতিল করা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন‌্য। রোগীদের উপর নির্ভর করে যেটুকু বব‌্যসা চলছিল, সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। এখন কতদিন এই পরিস্থিতি চলবে জানি না। ততদিনে ব‌্যবসার ব‌্যাপক ক্ষতি হবে।

    মারকুইস স্ট্রিটে শ‌্যামলী পরিবহণের শাখায় বসেছিলেন কর্মচারী সুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘ওপারে পরিস্থিতি জটিল হতেই বাসের বুকিং বাতিল করতে হয়েছিল। হাসিনা সরকারের ইস্তফার পর ভেবেছিলাম পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাবে। পুনরায় স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া যাবে। কিন্তু এখন বর্ডার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুকিংয়ের টাকা ফেরত চেয়ে যাত্রীদের ফোন সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’’ সদর স্ট্রিটের হোটেলের রিসেপশনিস্ট বাপন মাইতি বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে ব‌্যবসা মন্দা চলছে। জুন মাসে তবু কিছু বুকিং ছিল। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে কোনও বুকিং হয়নি। কতদিন এরকম চলবে জানি না। চিকিৎসা করাতে এসে কলকাতায় আটকে ছিলেন বহু বাংলাদেশি। হাসিনার পদত‌্যাগের পর দেশে ফিরতে অনেকেই তড়িঘড়ি হোটেল ছাড়তে লাগেন। বর্ডার সিল হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা করাতে আসা বাংলাদেশিরা বিপাকে পড়েছেন। অসুস্থ মাকে নিয়ে খুলনা থেকে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন নায়েজ মোরশেদ।

    আজ, মঙ্গলবার তাঁর ফেরার টিকিট। দিন চারেক আগে কলকাতায় আসেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের জেরে বাসে আসার সময় খুলনায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল। অনেক কষ্ট করে কলকাতায় পৌঁছই। মঙ্গলবার ফেরার টিকিট রয়েছে। এখন শুনছি সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। দেশে ফেরাটাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর এক বাংলাদেশি বলেন, হাতে যা টাকা রয়েছে তা দিয়ে দু-তিনদিন চলে যাবে। তারপর কী হবে জানি না।
  • Link to this news (প্রতিদিন)