• আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবন থেকে বৃক্ষরোপণ উৎসব সরাল বিশ্বভারতী
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: আজ, বুধবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। এই উপলক্ষ্যে সারা সপ্তাহজুড়ে বিশ্বভারতীতে রয়েছে কবিস্মরণ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জেরে উদ্বেগে রয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এদিনের মূল অনুষ্ঠান বৃক্ষরোপণ উৎসব আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবন থেকে সরালো বিশ্ববিদ্যালয়। তার পরিবর্তে অনুষ্ঠানটি শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ সংলগ্ন পুরনো মেলার মাঠে আয়োজন করা হয়েছে। এমনকী, উৎসবের মাঝে যাতে কোনওরকম অঘটন না ঘটে, তারজন্য আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পুলিস-প্রশাসনকে জানাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের প্রভাব কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে যাতে না পড়ে, সেদিকে তৎপর বিশ্বভারতী।

    ২২ শ্রাবণ কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিবছরই দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে বিশ্বভারতী। এই উপলক্ষ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। ‘মৃত্যুর মধ্যেই প্রাণের সূচনা’, গুরুদেবের এই ভাবনা ও ভাবধারাকে স্মরণ করে এদিনই বিশ্বভারতীর রীতি ও ঐতিহ্য মেনে মহাসমারোহে বৃক্ষরোপণ উৎসব আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা নাচ ও গানে অংশগ্রহণ করেন। এরজন্য শান্তিনিকেতনের সঙ্গীত ভবনে শুরু হয়েছে মহড়া। অনুষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে আয়োজন করেছিল শান্তিনিকেতন কর্মীমণ্ডলী। কিন্তু বাংলাদেশের বিশৃঙ্খলার আঁচ পড়েছে শান্তিনিকেতনেও।  গণঅভ্যুত্থানের জেরে সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এই ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বেগে রয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই মর্মে মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসে একটি জরুরি বৈঠক তলব করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ভবনের অধ্যক্ষরা। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ ভবনে বৃক্ষরোপণ উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। পরিবর্তে, স্থান বদল করে তা উপাসনা গৃহ সংলগ্ন পুরনো মেলার মাঠে আয়োজিত হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল। 

    বিষয়টিকে ‘অনিবার্য কারণ’ হিসেবে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে, প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতির আঁচ যাতে আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে না পড়ে, সেজন্যই কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। 

    এদিন বৈঠকের পর উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আধিকারিকরা পুরনো মেলার মাঠের জগদেশ কানন পরিদর্শন করেন। হাতে যেহেতু সময় কম, সেজন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, আলোচনার মাধ্যমে স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের অশান্তির জেরে করা হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভবন বিশ্বভারতীর সম্পত্তি। সেটিকে সুরক্ষিত রাখতে কোনও আপস করা হবে না। মহকুমা পুলিস প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগকে জানানো হয়েছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)