• ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে নির্মাণের ত্রুটি স্বীকার প্রজেক্ট ডিরেক্টরের
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: মাথাব্যথার আর এক নাম ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। সার্ভিস রোড, নিকাশি ব্যবস্থা, সড়ক নির্মাণ সহ একাধিক বিভাগে ব্যাপক ত্রুটি। রানাঘাট পুরসভার সঙ্গে যৌথ পরিদর্শনে নেমে কার্যত ‹প্রজেক্ট ফল্ট› বা নির্মাণের ত্রুটি স্বীকার করে নিলেন ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বর্তমান প্রজেক্ট ডিরেক্টর অমিতকুমার সিংহ। ফলে এতদিন ধরে পুরসভা যে দাবি করে আসছিল, একপ্রকার তাতেই সিলমোহর পড়ল।

    সোমবার রানাঘাট পুরসভায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং পুর কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খোদ প্রজেক্ট ডিরেক্টর নিজেই। দীর্ঘ আলোচনার পর সমস্যা জর্জরিত এলাকা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে প্রজেক্ট ডিরেক্টর অমিতকুমার সিংহ এবং তাদের ইঞ্জিনিয়াররা একাধিক জায়গা ঘুরে দেখেন। চূর্ণি নদী সংলগ্ন রামনগর ১ অঞ্চলের বেশকিছু এলাকা, প্রামানিক মোড় সংলগ্ন সার্ভিস রোড, মনোরমার মতো জায়গাগুলি ঘুরে দেখা হয়। সূত্রের খবর, পরিদর্শনে প্রাক নির্মাণ পর্বে যে নকশা তৈরি হয়েছিল তাতেই ভুল হয়েছে বলে ধরা পড়েছে। এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিকাশি। এই বিভাগে প্রথমেই দেখা গিয়েছে চূর্ণি নদী সংলগ্ন মনোরমার কাছে কালভার্ট থাকলেও তা দিয়ে নিকাশির জল নদীতে পড়েই না। আবার যদি জল বের হয়, তবে নদীতে যাওয়ার পরিবর্তে জনবহুল ওই এলাকার একাধিক বাড়ি ভাসিয়ে দেয়। দ্বিতীয় সমস্যা, নিকাশি নালা। দেখা গিয়েছে, নালাগুলির ঢাল যেদিকে হওয়ার কথা তার উল্টোদিকে বইছে জল। যা ত্রুটির এক্কেবারে হাতে গরম প্রমাণ। এছাড়াও জাতীয় সড়কের ব্রিজগুলি থেকে ড্রেন পাইপগুলির সংযোগ নেই নালাগুলির সঙ্গে। ফলে ভেসে যাচ্ছে সার্ভিস রোড এবং একাধিক ওয়ার্ড। ত্রুটি ধরা পড়েছে সার্ভিস রোড নির্মাণ পদ্ধতিতেও। ইতিমধ্যেই যে দুই জায়গায় ধস নেমেছে তার খাড়া ঢাল এবং পাশে গার্ড ওয়াল না থাকাই বিপর্যয়ের কারণ। পুরসভার দাবি, পরিদর্শনে নকশা এবং নির্মাণের ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রজেক্ট ডিরেক্টর নিজেই। বিষয়টি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা এতদিন ধরে বারবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বলে আসছিলাম নকশা এবং নির্মাণে ভুল রয়েছে। কিন্তু ওরা স্বীকার করেনি। সোমবার সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পর আমাদের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছেন ডিরেক্টর। এদিকে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রজেক্ট ডিরেক্টর অমিতকুমার সিংহ বলেন, খুব আশাপ্রদ বৈঠক হয়েছে। আমরা সমস্ত বিষয়কে সমাধানের চেষ্টা করছি। এতেই প্রশ্ন উঠছে, পুরোদস্তুর তৈরি হয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কের এত ত্রুটি এখন ঠিক হবে কীভাবে? ফের কি তবে কোটি কোটি টাকার খরচে সমস্যার সমাধান হবে, নাকি রানাঘাটবাসীর ভাগ্যে দুর্ভোগই লেখা থাকবে? উত্তর দেবে সময়।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)