• বন্যা সত্ত্বেও প্রসূতিদের বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা, বসছে মেডিক্যাল ক্যাম্প
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আরামবাগ: নিম্নচাপের ফলে খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে কঠোর পরিশ্রম করে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে যাচ্ছেন খানাকুল দু’ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত স্বাস্থ্যকর্মীরা। কখনও নৌকোয় করে কখনও আবার পায়ে হেঁটে। কোথাও এক হাঁটু জল, কোথাও আবার এক কোমর জল পেরিয়ে ছাতা নিয়ে গর্ভবতী মহিলাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ দিচ্ছেন তাঁরা। প্রসবের সময় চলে আসায় খানাকুল দু’ নম্বর ব্লক হাসপাতাল তথা নতিবপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে নৌকো পাঠিয়ে তাঁদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, বন্যার সময়ে ডেলিভারি হওয়ার ডেট চলে আসায় আমরা খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। এই বন্যার মধ্যে কোথায় যাব, কাকে পাব ভেবে পাচ্ছিলাম না। আমাদের মনে হচ্ছিল হয়তো বাড়িতেই প্রসব করাতে হবে। কিন্তু দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ‌তাঁরা এই বন্যার মধ্যেও বাড়িতে এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন। ওষুধ দিয়ে যাচ্ছেন। ‌আমরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছি।

    খানাকুল ২ বিএমওএইচ ডাঃ রক্তিম চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমাদের খানাকুল দু’নম্বর ব্লক এলাকায় অনেক গ্রামই জলে ডুবে রয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করছি। স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রায় ১২ জনের প্রসব হওয়ার কথা। তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে এখনই  নতিবপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা রোগী ও রোগীর পরিবারের পাশে রয়েছি। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে একটানা বৃষ্টিতে খানাকুল দু’ নম্বর ব্লকের বেশিরভাগই জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যেতে সমস্যায় পড়তে হয় রোগীদের। এরপরই খানাকুল ২ বিএমওএইচ রক্তিম চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে খানাকুল দুই ব্লকের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প গঠন করা হয়। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা বসে রোগীদের ওষুধ দেন। এরই মধ্যে সমস্যার বিষয় হয়, প্রসূতি মহিলাদের চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ। তাঁরা বন্যার জল পেরিয়ে ক্যাম্পগুলোতে আসতে না পারায় আশাকর্মীরা ওই প্রসূতি মহিলাদের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা করছেন। কোথাও এক হাটু জল, আবার কোথাও এক কোমর জল পেরিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে তাঁরা পৌঁছে যান প্রসূতি মহিলাদের বাড়িতে বাড়িতে। সেখানে প্রসূতি মহিলাদের শারীরিক অবস্থার কথা শুনে খাতায় নথিভূক্ত করেন এবং ওআরএস, আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড তাঁদের দেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৌকোয় করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে সেখান থেকে ওষুধ বের করে বিভিন্ন ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে এই পরিষেবা বজায় রাখতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। স্থানীয় চিংড়া এলাকার গর্ভবতী আসিমা বিবি বলেন, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভুগছিলাম। বিষয়টি আশা দিদিমণিদের জানানোর পরেই ওঁরা আমায় নতিবপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। প্রথমে বন্যার ফলে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। এখন চিকিৎসা পেয়ে খুশি হয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)