• ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হাওড়ার দ্বীপাঞ্চল, হুগলিতে ক্ষতি ফসলের
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া, সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া ও তারকেশ্বর: ডিভিসির ছাড়া জল ভাসিয়ে দিল গ্রামীণ হাওড়া ও হুগলির বেশ কিছু অঞ্চল। সোমবার রাতেই প্লাবিত হয়েছে আমতা ২ নং ব্লকের দ্বীপাঞ্চল উত্তর ভাটোরা, দক্ষিণ ভাটোরা, ঘোড়াবেড়িয়া, চিৎনান। হুগলির তারকেশ্বর, ধনেখালি ও জাঙ্গিপাড়া ব্লকের বেশ কিছু বাড়ি জলের নীচে চলে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল।  

    জল বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন হাওড়ার দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে কাউকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়নি। জলের স্রোতে চারটি বাঁশের সেতু ভেঙে যাওয়ায় দ্বীপাঞ্চল মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় সমস্যা আরও বে‌঩ড়েছে। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই দ্বীপাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে জোয়ারের জল নেমে যাওয়ায় দ্বীপাঞ্চলের রাস্তা চলাচল যোগ্য হয়েছে। উত্তর ভাটোরায় এখনও জল আছে। ডিভিসি জল ছাড়া কমিয়েছে, ফলে রাতে পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে মনে করছেন তিনি। উদয়নারায়ণপুর সেভাবে জলমগ্ন না হলেও সোমবার রাত থেকে হরিহরপুর এলাকায় বাঁধ উপচে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে। উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, কিছু কিছু এলাকায় জল নামতে শুরু করেছে। উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি নেই। হাওড়া কৃষি দপ্তরের হিসেব, প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ধানের পাশাপাশি ১৫০ হেক্টর জমির সব্জি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাওড়া জেলার কৃষি অধিকর্তা রামপ্রসাদ ঘোষ জানান, উদয়নারায়ণপুর, আমতা ২ নং ব্লকের দ্বীপাঞ্চল এবং আমতা ১ নং ব্লকের রসপুর এলাকার অনেক জমি নদীবাঁধের পাশে আছে। এই সব জায়গায় জল জমে চাষের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। 

    হুগলিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। শনিবার রাত থেকে দামোদরের জল ঢুকতে শুরু করে। নিম্ন দামোদর এলাকার চাষের জমি ও জনবসতি জলের তলায় চলে যায়। মঙ্গলবার সেখানে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষিজ পণ্য বিপণন দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ওঙ্কার সিং মিনা, মহকুমা শাসক মুক্তা আর্য, মন্ত্রী বেচারাম মান্না, তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় সহ আধিকারিকরা। রামেন্দুবাবু জানান, তারকেশ্বর বিধানসভার চাঁপাডাঙা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ধনেখালির গোপীনাথপুর পঞ্চায়েত এলাকা পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ চাষের জমি জলের তলায়। নদীবাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দাদের আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়েছে।

    একই পরিস্থিতি জাঙ্গিপাড়া বিধানসভা এলাকায়। রাজবলহাট পঞ্চায়েতের ছিটগোলা, রসিদপুর পঞ্চায়েতের আকনা, সেনপুর সহ বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির। বন্যা কবলিতদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর ও পর্যাপ্ত খাবার রাখা হয়েছে। হুগলির মগরা-১ পঞ্চায়েতের হেদিয়াপোতায় জল নামছে। তবে জনজীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। মঙ্গলবার সকালেও কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়। কুন্তী নদী সংলগ্ন একাধিক এলাকায় ভাঙনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তারা জানিয়েছেন, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)