• বেনাপোলে দাঁড়িয়ে ভারতীয় পণ্যবোঝাই ৭৩৪ লরি-ট্রাক
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পেট্রাপোল ও ঘোজাডাঙা: ভারত থেকে অসংখ্য পণ্যবোঝাই লরি বাংলাদেশের বেনাপোলে গিয়েছিল জিনিসপত্র নামাতে। কিন্তু বাংলাদেশে চলমান অশান্তির জেরে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে বেনাপোলেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ৭৩৪টি ভারতীয় পণ্যবোঝাই লরি। এক একটি লরিতে এক-এক ধরনের পণ্য রয়েছে। সোমবারের পর লরির নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে এদিন ভারত থেকে বেনাপোলে যে গাড়িগুলি গিয়েছিল, তার মধ্যে আটকে পড়া প্রায় ৪৭টি খালি লরি মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ফেরানো শুরু হয়। কিন্তু ৭৩৪টি পণ্যবোঝাই লরি নড়েনি। 

    এই পরিস্থিতির জেরে পেট্রাপোল সীমান্তে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা মার খাচ্ছে। সোমবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় বাণিজ্য ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হয়নি। ব্যবসায়ীরা জানালেন, পেট্রাপোল সীমান্তে একদিনে গড়ে ১২০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ফলে, একদিনেই এই বিপুল টাকা লোকসান হল বলা যায়। ওই ৭৩৪টি লরিতে কয়েক কোটি টাকার পণ্য রয়েছে। লরি মালিক থেকে ব্যবসায়ী, সকলেই তাই উদ্বেগে রয়েছেন। মঙ্গলবার সকালেও বেনাপোলের দিক থেকে আতসবাজির শব্দ শোনা গিয়েছে। সোমবার বেনাপোলে আটকে পড়া যে খালি লরিগুলি এদিন দেশে ফেরানো হয়েছে, সেগুলির প্রত্যেকটিইে চলেছে চিরুনি তল্লাশি।   

    পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক। বেনাপোলে আমাদের দেশের যে ৭৩৪টি পণ্যবোঝাই লরি রয়েছে, সেগুলি দ্রুত আনলোড করে আমাদের দেশে ফেরানো হোক।’

    ঘোজাডাঙা সীমান্তে ভারতের দিকেও বহু লরি দাঁড়িয়ে রয়েছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রত্যেকে। এপার বাংলা থেকে পণ্যবাহী লরি ওপার বাংলায় যাচ্ছে না। কাঁচালঙ্কা, আদা, রসুন, পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর গাড়ি বাংলাদেশে ঢোকেনি। তবে এদিন দুপুরের পর অল্প অল্প করে গাড়ি যাচ্ছে বাংলাদেশে। কাস্টমসের ক্লিয়ারিং এজেন্ট কান্তি দত্ত বলেন, গত দু’দিন ধরে প্রায় ৩৫০টি ট্রাক আমাদের দেশে রয়ে গিয়েছে। ওখানেও আমাদের বেশ কিছু গাড়ি আটকে রয়েছে। আশা করছি সেগুলি দ্রুত ফিরে যাবে।’ সীমান্ত দিয়ে দু’দেশের নাগরিকদের যাতায়াতও অনেক কমে গিয়েছে। আব্বাস মল্লিক নামে এক অটোচালক বলেন, ‘একমাস আগেও ভালো ব্যবসা হতো। এখন অবস্থা খারাপ।’ সিন্টু মল্লিক নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘আমার চারচাকা গাড়ি রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে তাদের কলকাতায় নিয়ে যাই। প্রায় একমাস যাত্রী নেই। বাংলাদেশে এই অশান্তি চলতে থাকলে ক্ষতি আমাদেরও।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)