• অশান্ত বাংলাদেশ: বাজারে জোগান কমল পদ্মার টাটকা ইলিশের, সীমান্তের বাজারগুলিতে বাড়ল দাম
    বর্তমান | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলঙ্গি: বাংলাদেশে নতুন করে অশান্তি ছড়াতেই সীমান্তবর্তী জেলার বাজারে টান পড়েছে টাটকা পদ্মার ইলিশের। পদ্মার চোরাপথেও রুপালি শস্য ঢুকছে না মুর্শিদাবাদ সীমান্তে। গত সপ্তাহে ঢোকা ইলিশই এখন বাজার দাপাচ্ছে। ইলিশের টান থাকায় এক ধাক্কায় খুচরো বাজারে দামও বেড়ে গিয়েছে। এক কেজির একটু বড় আকারের মাছের দাম কেজি পিছু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বড় মাছের দাম ৫০০ টাকা অবধি বেড়েছে। 

    টাটকা বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এদেশে। বাজারে সাধারণত ১২০০ ও ১৩০০ গ্রামের ওজনের ইলিশের দাম কেজিপিছু ১৫০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা করে বিক্রি হয়। মঙ্গলবার জলঙ্গির বাজারে ইলিশ বিকিয়েছে ২০০০ টাকা কেজি দরে। সর্বোচ্চ ১৮০০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। সেই ইলিশের দাম ২৫০০ টাকা কেজি। ওপারে ইলিশের দাম না মিললেও এপারে পাঠাতে পারলে বিপুল মুনাফা হচ্ছে পাচারকারীদের। ফলে চোরাপথে ইলিশ কিনে বাজারে বিক্রি করে ভালোই মুনাফা করছে খুচরো ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেক্ষেত্রেও জোগান নেই। বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি কবে ঠিক হয় সেদিকে তাকিয়ে আছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। 

    জলঙ্গি সীমান্তের মাছ বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, নিয়মিত মাছ পাওয়া যায় না। যখন যে কয়েক পেটি মাছ আসছে সেগুলি আমরা কিনে নিচ্ছি। মাছের জোগান বেশি থাকলে দাম কম থাকে। এখন যেহেতু খুব একটা বেশি পরিমাণে মাছ ঢুকছে না, তাই পদ্মার মাছের দাম কিছুটা বেশি আছে। এখন বাংলাদেশে যা অবস্থা, কবে আবার মাছ পাব জানি না। পদ্মার টাটকা ইলিশ এখানে পাওয়া যায় বলে কিছুটা দাম ভালো পাই আমরা। কিন্তু এখন সেই মাছ বাসি করেই বিক্রি করতে হচ্ছে। 

    এক ক্রেতা কামারুজ্জামান শেখ বলেন, প্রতিবছর জুলাই আগস্ট মাসে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায়। জলঙ্গি ও সাগরপাড়ার বাজারে ভালোই টাটকা মাছের আমদানি হয়। এখন সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ছে। সেজন্য ইলিশ পাচার অনেকটাই কমেছে। তবে যে পরিমাণ ইলিশ আসছে তা স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। ডায়মন্ডহারবারের ইলিশও বাজারে আছে। কিন্তু সেই মাছের তুলনায় পদ্মার ইলিশের স্বাদ অনেক ভালো। তাই দাম বেশি হলেও বছরে অন্তত দুই তিনবার পদ্মার ইলিশ কিনে খাই আমরা। বাংলাদেশে অশান্তি বাড়তেই ইলিশের দাম এদিন বেড়ে গিয়েছে। 

    জলঙ্গির মাছ বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ডায়মন্ড হারবার কিংবা দীঘার ইলিশ আমরা বিক্রি করছি অনেকদিন ধরে। তবে বছরের এই দুই তিন মাস একটু বেশি পরিমাণে পদ্মার ইলিশ বিক্রি করতে পারি। মাছ যত টাটকা হয়, তত দাম ভালো পাওয়া যায়। এখন জোগান কম আছে। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও বেশি পরিমাণে মাছ এপারে আসবে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। এখন এই পরিস্থিতিতে আমাদের মজুত করা মাছের উপর ভরসা করতে হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)