এই সময়, বাঁকুড়া ও হুগলি: ভিনরাজ্যে আলু যেতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এ বার যৌথ ভাবে পথে নামলেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার রাজ্যব্যাপী কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। এদিন বাঁকুড়ার ৪ জায়গায় মিছিল ও পথসভা করেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহে বৈতল মোড়ে জাতীয় সড়কের উপরে আলু ছড়িয়ে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা।এদিকে, এদিনই হুগলির গুড়াপে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের রাজ্য নেতা লালু মুখোপাধ্যায় ও মন্টু জ্যোতিকে মারধর ও হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই সময়ে গুড়াপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে না থাকলে বড় ধরনের গন্ডগোলের আশঙ্কা ছিল বলে জানিয়েছেন লালু।
তিনি বলেন, ‘আজ বুধবার সিঙ্গুরে জেলা কমিটির বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে অভিযোগ জানানো হবে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের কাছে। বৈঠকের পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’ হুগলি গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে। তার পরেও বেশ কয়েকটি জায়গায় আলুর দাম নিয়ে ফারাক রয়েছে। এ দিন কী ঘটেছে সেটা আমি জানি না। কিন্তু বুধবার আলু নিয়ে জেলা কমিটির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হবে সিঙ্গুরে।’
ভিনরাজ্যে আলু যেতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ২০ জুলাই রাজ্য জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সেই কর্মবিরতির জেরে হিমঘর থেকে খোলা বাজারে আলু সরবরাহ ব্যাহত হয়। এর পর ২৪ জুলাই হুগলির হরিপালে রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে বৈঠক হয় পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির।
সেই বৈঠকের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাঁদের দাবি, এখনও সমস্যার সুরাহা হয়নি। ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হচ্ছে এখনও। তারই প্রতিবাদে এবার যৌথ ভাবে পথে নামলেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা। এদিন বাঁকুড়ার ৪ জায়গায় কর্মসূচি নেওয়া হয় বাঁকুড়া জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী বাঁচাও সমিতির পক্ষ থেকে।
কোতুলপুর, বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ, পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা ও সিমলাপালের বিক্রমপুরে মিছিল ও পথসভায় অংশ নেন প্রতিবাদীরা। বাঁকাদহে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎবরণ প্রতিহার, সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষ।
সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সম্পাদক বলেন, ‘২৪ তারিখ কৃষি বিপণনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। কিন্তু আশ্বাস মিললেও সমস্যার সুরাহা হয়নি। এখনও ভিনরাজ্যে আলু পাঠাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন বর্ডারে আটকে দেওয়া হচ্ছে গাড়ি। তাই রাজ্যগত ভাবে এদিন আমরা পথে নামার কর্মসূচি নিয়েছিলাম। বিভিন্ন জেলায় মিছিল, পথসভা হয়েছে।’
কোতুলপুরের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য উপদেষ্টা বিভাস দে। তিনি বলেন, ‘ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে এখনও বিধিনিষেধ রয়েছে। এমনকী ভিন জেলাতেও আলু পাঠাতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমাদের দাবি, আলুর উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হোক। সেই সঙ্গে আলু নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের দাবিও জানাচ্ছি।’