বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে ফি বছর হাজিরা শামুকখোলদের
এই সময় | ০৭ আগস্ট ২০২৪
সূর্যকান্ত কুমার, কালনা
ওরা গ্রামে এলেই বোঝা যায় বর্ষা দোরগোড়ায়। শুরু হয় চাষের প্রস্তুতি। ফি বর্ষায় যেন বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে কালনার মানিকহার গ্রামে হাজির হয় পরিযায়ী শামুকখোলের দল। গত বেশ কয়েক বছর ধরে এটাই চেনা ছবি এই গ্রামে। প্রজনন পর্ব সেরে শীতের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করলেই তারা উড়ে যায় অন্য ঠিকানায়।অতিথি পাখিদের নিরাপত্তা নিয়ে সজাগ গ্রামবাসীও। পাখিদের বিরক্ত করা হলে জরিমানা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন গ্রামবাসী। পাখি শিকারের চেষ্টা করলেই দিতে হবে হাজার টাকা জরিমানা।
কালনা শহর থেকে প্রায় ১৩ কিমি দুরত্বের মানিকহার গ্রাম পাখিগ্রাম বলেই পরিচিত। প্রতি বর্ষায় এই গ্রামে ঝাঁকে ঝাঁকে হাজির হয় এই পরিযায়ীর দল। গ্রামের মসজিদ সংলগ্ন গাছ, ধানের জমি, জলাশয়ে বেশি দেখা মেলে ওদের।
গ্রামের বাসিন্দা মনসুর মোল্লা বলেন, ‘বর্ষা এলেই ওরা হাজির হয়ে যায় গ্রামে। ওরা এলেই বুঝতে পারি এবার বৃষ্টি শুরু হবে পুরোদমে। ওদের দেখে গ্রামের অনেকেই চাষের কাজ শুরু করেন পুরোদমে।’ গ্রামের বাসিন্দা তন্ময় দাস বলেন, ‘ওদের পছন্দের খাবার হলো গুগলি, শামুক, নানারকমের পোকামাকড়। গাছের বাসায় ওরা ডিম পাড়ে। শীতের শুরুতেই ওরা ছানাদের নিয়ে চলে যায় গ্রাম ছেড়ে।’
বর্ষা আসার সঙ্গে এই অতিথিদের যোগ রয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ওদের আসার সঙ্গে বর্ষার একটা অদ্ভুত যোগ আছে। এবার বর্ষা একটু দেরিতে এসেছে। ওরাও কিন্তু অন্য বছরের তুলনায় দেরিতে এসেছে এবার।’ জেলার সহকারী বনাধিকারিক সোমনাথ চৌধুরী বলেন, ‘শামুকখোল শ্রাবণ মাসে প্রজনন পর্ব সারে। এর পর শীতে ওরা ফিরে যায়।’
পরিযায়ীদের যাতে কেউ উৎপাৎ না করেন তার জন্য জরিমানার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। গ্রামের অগ্রণী ক্লাবের সদস্যরা সজাগ দৃষ্টি রাখেন পাখিদের উপর। গ্রামবাসী ও ক্লাবের সদস্য আব্দুল সেলিম শেখ বলেন, ‘কেউ পাখি শিকার করে ধরা পড়লেই হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। পাখিদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। যে কয়েক মাস ওরা আমাদের অতিথি সেই সময়টুকু ওদের নিরাপত্তা দেওয়াটাও আমাদের কর্তব্য।’