• সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ, তোলপাড় দলে‌
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ আগস্ট ২০২৪
  • দলের অবস্থা এখন রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভাল নয়। একের পর এক নির্বাচনে পরাজিত হয়ে কোণঠাসা সিপিএম। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে শূন্যতা কাটাতে পারেনি লালপার্টি। এই আবহে আবার বিপাকে পড়লেন একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন। এবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, এক মহিলাকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস করেছেন এই সিপিএম নেতা। এই ঘটনা নিয়ে ওই নির্যাতিতা সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এই ঘটনায় মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানান, স্থানীয় থানায় নির্যাতিতা অভিযোগ করলে পদক্ষেপ করা হবে।

    এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে জেলায়। তিনি জেলা সম্পাদকের পদে আছেন। সেখান থেকে সুশান্ত ঘোষ ইস্তফা দিতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকী সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব সুশান্ত ঘোষকে ভর্ৎসনা করেছে বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে সুশান্ত ঘোষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা সুশান্ত ঘোষ ১৯৮৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ২৯ বছর গড়বেতা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। মন্ত্রীও হন। ২০০২ সালের বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে নাম জড়িয়ে যায় তাঁর। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলেও হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে নিজের গড়ে ফেরেন তিনি। সিপিএম তখন তাঁকে দলের জেলা সম্পাদক করে।


    অন্যদিকে নির্যাতিতা মহিলার বাড়ি মেদিনীপুরে। এখন সেচ দফতরে চাকরি করেন। ওই মহিলার অভিযোগ, ‘২০০৬ সালে তৎকালীন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তখন মন্ত্রী বলেছিলেন, আমার জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন। তিনি একদিন তাঁর বাড়িতে ডাকেন। মন্ত্রী বাড়িতেই শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর কাউকে জানালে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। বারবার ডেকে সহবাসে লিপ্ত হন। পরে আমার বিয়ে হলেও প্রাক্তন মন্ত্রী সম্পর্ক রেখে চলেন। আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভেঙে যায়। এখন জানতে পারি, একাধিক মহিলার সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি সুশান্ত ঘোষের শাস্তি চাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাই।’

    এই ঘটনা এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনা জানতে পেরে একমাস আগে সিপিএম তদন্ত কমিটি গড়ে তোলো। সেই কমিটির সদস্যরা নির্যাতিতা মহিলার বাড়িতে ঘুরেও এসেছেন। সেখান থেকে যা তথ্য পেয়েছেন তা রাজ্যের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নির্যাতিতার দাবি অনুযায়ী, ‘‌সুশান্ত ঘোষ সম্পর্কে সিপিএমের কাছে এই ঘটনা নিয়ে প্রচুর তথ্য আছে। কিন্তু দলের একাংশ গোটা ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’‌ এখন দেখার দল থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)