• সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক মমতার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি: ভৌগোলিক সীমানার কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পশ্চিমবঙ্গেই। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, “শান্ত থাকুন। উস্কানিমূলক কথা ছড়াবেন না।” তার দু’দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসলেন মমতা। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ডিজিকে নিয়ে নবান্নে এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেন।

    প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সোমবার ডিআইজি এবং তাঁর উচ্চস্তরের পদমর্যাদার অফিসারদের সীমান্তবর্তী এলাকার থানাগুলিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। সেই মোতাবেক সেখান থেকে তাঁরা কী রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তারই পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিনিয়ত যেন সীমান্তবর্তী জেলাগুলির দিকে নজর রাখা হয়, তার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। প্রতি মুহূর্তে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলির থেকে রিপোর্ট তলব করছে নবান্ন। যেকোনো জরুরি ভিত্তিক তথ্য যেন তৎক্ষণাৎ নবান্নের কাছে পৌঁছায়, সে বিষয়েও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ সীমানার জন্য বাংলার উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। অনুপ্রবেশের প্রবণতা বাড়ছে। সীমান্তের দায়িত্বে পুরোপুরি বিএসএফ থাকলেও, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে যাতে কোনও অশান্তির দানা বাধতে না পারে, তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে রাজ্য পুলিশকেও। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রের সর্বদল বৈঠক চলাকালীন তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছিল, যাতে প্রতি মুহূর্তে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশ ইস্যুতে পদক্ষেপ করে।

    সূত্রের খবর, এই নিয়ে বৈঠকে পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশ্বস্তও করেন। বর্তমানে মমতার নির্দেশে সীমান্তের পরিস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রতি মুহূর্তে পর্যালোচনা করা হচ্ছে নবান্নে।

    উল্লেখ্য, সোমবার বিধানসভায় থাকাকালীনই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আগরতলায় নেমে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার খবর পেয়েছেন মমতা। এরপরেই মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আলোচনা শেষে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

    তিনি জানিয়েছিলেন, “দেশে যে সরকার আছে তাদের উপর ছেড়ে দিন। আপনারা নিজেরা এমন কোনও মন্তব্য করবেন না যাতে কোনও হিংসা বা প্রতিরোধ শুরু হতে পারে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন, কিন্তু সেটা নিয়ে এমন কিছু লিখবেন না বা বলবেন না যাতে বাংলা বা ভারতের শান্তি নষ্ট হয়।” এবারও নিজ অবস্থানে স্থায়ী থাকলেন মমতা। সীমান্তের পরিস্থিতির দিকে সদা সতর্ক দৃষ্টি রেখে আবার জরুরি বৈঠক করলেন নবান্নে।

  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)