অর্ক দে, বর্ধমান: শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান পদে বসবেন। বর্ধমানের জামাইকে নিয়ে খুশির পরিবেশ লস্করদিঘি এলাকায়। গর্বিত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আশা অশান্ত বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে পারবেন ‘বাংলার জামাইবাবু’। বুধবার বর্ধমানের বাড়ির সোফায় বসে বলছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের শ্যালক আসফাক হোসেন।
তিনি বলেন, “ওইরকম অমায়িক মানুষ সচরাচর দেখা যায় না। মাটির মানুষ বলা চলে। শান্ত, নম্র, বিনয়ী, মিষ্টভাষী মানুষ আমি আর দেখিনি। ওঁর জ্ঞান, কর্মজীবনের কথা সকলেই জানেন। তিনি এবার পড়শি দেশের প্রধান পদে বসবেন। আমাদের গর্ব হচ্ছে।” সেই কবে বর্ধমানে এসেছিলেন একবার। ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউনুস। তার পরই একবার শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী আফরোজ।
সেই সময় দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে একবার ট্রেন ভ্রমণের কথা প্রসঙ্গে আসফাক জানান, বাংলাদেশ ফেরার দিন বর্ধমান থেকে হাওড়া যাওয়ার সময় জামাইবাবুর জন্য ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেটে দিয়েছিলেন। কিন্তু উনি ফার্স্ট ক্লাসে না গিয়ে সাধারণ কামরায় ওঠেন। পরে ফোনে আসফাককে ইউনুস জানান, সাধারণ কামরায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে বলতে হাওড়া পৌঁছে যান। স্ত্রী অবশ্য বসার জায়গা পেয়েছিলেন। আসফাক বলেন, “কতটা মাটির মানুষ হলে এমনটা করতে পারে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবে বলে বিলাসিতা ছেড়ে সাধারণ কামরায় উঠে যান। উনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন। পোশাকেও কোনও বিলাসিতার ছাপ নেই। এক বস্ত্রে কাটিয়ে দিতে পারেন। খিচুড়ি খেতে ভালোবাসেন।”
পেশায় ব্যবসায়ী আসফাক হোসেন প্রতি বছর নিয়ম করে ঢাকার গুলশনে দিদি-জামাইবাবুর বাড়ি যান। গত বছরও বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। আসফাক বলেন, “ওইরকম উচ্চমানের ও উচ্চ মনের মানুষের দেশ চালানোর সবগুণ রয়েছে। আর ওইরকম একজন বিদগ্ধ মানুষ বাংলাদেশের প্রধান হলে আমাদের ভারতের সঙ্গে আরও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে বলেই বিশ্বাস।” আসফাকরা এক ভাই ও এক বোন। বাবা-মা প্রয়াত। আসফাক স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বর্ধমান শহরের লস্করদিঘি এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে থাকেন। সেখানে যেন উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।