• বন্যা পরিস্থিতি, ফের বাড়ছে উদ্বেগ
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: জলবন্দি মানুষের দুদর্শার কাহিনি কানে ঢুকছে না কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা ডিভিসির। দামোদর অববাহিকা এলাকায় কোথাও অতিবর্ষণের তথ্য নেই। তাও জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে বন্যার ভ্রুকুটিকে আরও জোরাল করল ডিভিসি। ডিভিসি সূত্রে জানানো হয়েছে, পাঞ্চেত থেকে ১০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, মাইথন থেকেও নতুন করে আরও ছ’হাজার কিউসেক করে জল ছাড়া হচ্ছে। দুই জলাধার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত যেখানে ৪৯ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল সেখানে এখন ৬৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে ফের দামোদর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫৮ হাজার ২০০ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। রাত থেকে সেখান থেকে প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক করে জল ছাড়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর জেরে নতুন করে নিম্ন দামোদর এলাকার পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি এলাকায় জল বাড়তে চলেছে।  দামোদর ভ্যালিকে ডিভিসি মূলত ছ’টি বেসিনে ভাগ করে। বরাকর ওয়েস্ট, বরাকর ইস্ট, দামোদর ওয়েস্ট, দামোদর ইস্ট, লোয়ার ভ্যালি ওয়েস্ট, লোয়ার ভ্যালি সাউথ। প্রথম চারটি বেসিনের জলই পাঞ্চেত ও মাইথন বাঁধে জমা হয়। ওই দুই বাঁধের জল ও লোয়ার ভ্যালি ওয়েস্টের জল আসে দুর্গাপুর ব্যারেজে। তাই প্রথম চারটি বেসিনে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলে মাইথন ও পাঞ্চেত উপচে পড়ার কোনও সম্ভবনা নেই। ডিভিসির দেওয়ার শেষ ২৪ ঘণ্টার তথ্য অনুযায়ী বরাকর ওয়েস্ট বেসিনে গড়ে ৩.৪ মিলিমিটার, বরাকর ইস্ট বেসিনে ২০.০ মিলিমিটার, দামোদর ওয়েস্ট বেসিনে ৫.৭ মিলিমিটার, দামোদর ইস্টে ১২ মিলিমিটার গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা কোনও ভাবেই মাত্রাতিরিক্ত বলা যায় না। বাঁধে জল ঢোকার পরিসংখ্যান থেকেও তা স্পষ্ট। দেখা যাচ্ছে, বুধবার সকাল ছ’টার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পাঞ্চেতে ৬৩ হাজার ২৪ একর ফুট জল ঢুকেছে। মাইথনে ২৪ ঘণ্টায় জল ঢুকেছে ১৭ হাজার ২৫ একর ফুট। পাঞ্চেত থেকে ৪৩ হাজার কিউসেক হারে জল ছেড়েও ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ হাজার ৯৬৭ একর ফুট জল ছাড়া গিয়েছে। অর্থাৎ যে পরিমাণ জল ঢুকছে তার থেকে প্রায় ২৩ হাজার একর ফুট জল বাড়তি ছাড়া হয়েছে। তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি ডিভিসি। বাঁধের জলস্তর আরও নামানোর জন্য দুপুর ১২টা থেকে পাঞ্চেত থেকে ৪৩ হাজার কিউসেকের পরিবর্তে ৫৩ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়তে শুরু করে। মাইথন থেকে ছ’হাজার কিউসেকের বদলে ১২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়তে শুরু করে। এতেই দামোদর ও বরাকর নদীতে জলের পরিমাণ আরও বেড়েছে। সেই জলই দুর্গাপুর ব্যারেজে আসা মাত্রই ব্যারেজে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে। ভেসে যাবে নতুন নতুন এলাকা। 

    তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ডিভিসি নিজেদের জলাধার থেকে পলি তুলে নাব্যতা বাড়াচ্ছে না। অল্প বৃষ্টি হলেই সেই জল বাঁধ থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ডিভিসি গঠনের উদ্দেশ্যই তো সফল হচ্ছে না। আমরা নিচু এলাকাগুলির জ঩ন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছি।   
  • Link to this news (বর্তমান)