• কৌশিকী অমাবস্যায় ৪টি স্পেশাল ট্রেনের দাবি তারাপীঠ মন্দির কমিটির
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: সামনেই তারাপীঠের সবচেয়ে বড় উৎসব কৌশিকী অমাবস্যা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটক, ভক্ত, সাধক মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে এই তিথিতে। কয়েক বছর ধরে এই তিথিতে হাওড়া থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেন চালায় পূর্ব রেল। কিন্তু এবার শুধু হাওড়া থেকে নয়, শিয়ালদহ, দেওঘর ও উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত চারটি স্পেশাল ট্রেন চালানোর জন্য রেলমন্ত্রীকে ই-মেল মারফত আবেদন জানাল মন্দির কমিটি। তাদের মতে, পর্যটকদের সুবিধার জন্যই এই আবেদন। সেইসঙ্গে রেলেরও আয় বাড়বে।

    কৌশিকী অমাবস্যার সময় অধিকাংশ পুণ্যার্থীই রেলপথে তারাপীঠে আসেন। বিগত দু’বছর রেলপথে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ পুণ্যার্থী এসেছিলেন। সেক্ষেত্রে রেলের মোটা অঙ্কের আয় হয়েছিল। যাত্রীদের সুবিধার্থে সাত বছর ধরে এই তিথিতে একটি স্পেশাল ট্রেনও চালিয়ে আসছে রেল। যদিও সেই ট্রেনটি হাওড়া থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত চলাচল করে। যা পর্যাপ্ত নয়। মন্দির কমিটির মতে, রেল  গত কয়েক বছরের হিসেব বের করলেই বুঝতে পারবে কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে কত সংখ্যক পুণ্যার্থী আসেন। বহু লোক এই তিথিতে আসার জন্য অগ্রিম টিকিট বুক করে রাখেন। ফলে যাঁরা পরে টিকিট বুকিং করতে যান তাঁরা সমস্যায় পড়েন। তারাপীঠে আসার ক্ষেত্রে হয়রানির মুখে পড়তে হবে বহু পর্যটককে। তাই এবার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি করেছে তারা।

    মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, কৌশিকী অমাবস্যায় সাত থেকে আট লক্ষ পর্যটক আসেন। যাঁদের অধিকাংশই ট্রেনে আসেন। হাওড়া থেকে একটিমাত্র স্পেশাল ট্রেন যথেষ্ট নয়। ৪০শতাংশ পর্যটক আসেন ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকে। তীর্থভূমিতে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। আবার অসম, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ২০ শতাংশ পর্যটক কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে আসেন। দূরত্ব বেশি হওয়ায় রেল ছাড়া উপায় নেই। অন্যদিকে কলকাতা সহ বেশ কয়েকটি জেলার মানুষের শিয়ালদহ থেকে যাতায়াতে সুবিধা। তাই কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, ঝাড়খণ্ডের দেওঘর এবং শিয়ালদহ থেকে একটি করে স্পেশাল ট্রেন চালানোর জন্য রেলমন্ত্রীকে ই-মেলে আবেদন জানানো হল। 

    তারাপীঠের অনেকই বলেন, গতবছর নানা কারণে ভক্ত সমাগম কিছুটা কম হয়েছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার আগে থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে, কৌশিকী অমাবস্যায় হোটেলগুলি তিনদিনের প্যাকেজে রুম ভাড়া নিতে বাধ্য করতে পারবে না। ফলে অনেকেই অমাবস্যার আগেরদিন তারাপীঠে আসবেন। পরেরদিন পুজো, হোম, যজ্ঞ করে ফিরে যাবেন। সেবাইতরা বলেন, অনেকের এইসময় তারাপীঠে আসার ইচ্ছে থাকলেও ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় আসতে পারেন না। বিভিন্ন দিক থেকে স্পেশাল ট্রেন চললে দেবীর কাছে পুজো দিতে আসার জন্য আগ্রহ বাড়বে। হোটেল মালিক নিতাই মাল বলেন, কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে আসার জন্য হোটেল বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। তাতেই মনে হচ্ছে এবার যাত্রী সমাগম অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে।  উল্লেখ্য, তারাপীঠে সব থেকে বড় উৎসব কৌশিকী অমাবস্যা। কথিত আছে, দেবী তারার অপর নাম কৌশিকী। শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করতে দেবী নিজ দেহ কোষ থেকে বের হয়ে আর এক দেবীমূর্তিতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমুল বৃক্ষের তলায় বামাখ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাই বিশেষ এই তিথিতে দেবীকে পুজো দিয়ে পুণ্য লাভের আশায় ফিবছর পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে।
  • Link to this news (বর্তমান)