• মমতার ঝাড়গ্রাম সফর ঘিরে হাতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা বনদপ্তরের
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে আগামী ৯ আগস্ট ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে লোকজন আসবেন। বিভিন্ন ব্লক থেকে আসা লোকজনদের জন্য হাতি উপদ্রুত এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার উদ্যোগ নিল জেলা বনদপ্তর। ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর ডিভিশনের জঙ্গল অধ্যুষিত রাস্তায় বাড়তি নিরাপত্তার জন্য  বনবিভাগের কর্মী, গাইডা, ট্র্যাকার ও  হুলাপার্টির সদস্য মিলে মোতায়েন থাকছেন প্রায় ৩৭০ জন।

    বিগত বছরের মতো অনুষ্ঠানের আগের দিন অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাড়গ্রামে এসে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজবাড়ি সরকারি কমপ্লেক্সে রাত্রিযাপন করার কথা। ঝাড়গ্রাম শহর ছুঁয়ে রয়েছে বাঁদরভুলা, কলাবনী  বৃন্দাবনপুর,  দুবরাজপুর, ধরমপুর ও রাখাগেড়িয়া জঙ্গলগুলি। তবে এই মুহূর্তে এই জঙ্গলগুলিতে হাতি নেই বললেই চলে। বুধবার পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম ডিভিশন এলাকায় মোট ৩৯টি হাতি অবস্থান করছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের সিধাডাঙা  জঙ্গলে ১১টি হাতির একটি দল রয়েছে।বেশ কয়েক বছর ধরে ঝাড়গ্রাম জেলায় সব চেয়ে বড় সমস্যা হাতির তাণ্ডব। আগের তুলনায় এলাকায় হাতির আনাগোনা যথেষ্ট বেড়েছে। মানুষের প্রাণহানি কমলেও ফসল নষ্ট,  ঘরবাড়ি ভাঙচুর অব্যাহত রয়েছে। প্রায় সারাটা বছর হাতির আতঙ্কের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন জেলার গ্রামাঞ্চলের লোকজন।  এলাকার বিশিষ্ট মহলের মতে, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও এ রাজ্যের বেলপাহাড়ী এলাকার প্রায় ৪০০ একর জায়গা নিয়ে ২০০০ সালে  ময়ূরঝর্ণা এলিফ্যান্ট রিজার্ভ ঘোষণা হয়েছিল, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেন। কেননা তৎকালীন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার ও রাজ্যের বাম সরকার মিলে এই প্রকল্পের হাজার হাজার কোটি টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ করেছে, তা সামনে আসা দরকার। বেলপাহাড়ী এলাকার পাথর বিক্রির রেভিনিউ পাওয়ার স্বার্থে বাম আমলের আমলারা এই কেন্দ্রীয় প্রকল্প ধামাচাপা রেখেছে বলে অভিযোগ। কেননা ময়ূরঝর্ণা এলিফ্যান্ট রিজার্ভ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জঙ্গলমহলের মানুষকে হাতির আক্রমণে প্রাণ দিতে হতো না। 

    এই নিয়ে ঝাড়গ্রামের  ডিএফও উমর ইমাম বলেন, আমাদের ডিভিশন থেকে রেগুলার যে কর্মসূচি থাকে, সেগুলি থাকছে। আমি নিজে হাতি অধ্যুষিত এলাকায় ফিল্ডওয়ার্ক করছি। জঙ্গল অধ্যুষিত রাস্তায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ঝাড়গ্রাম সফরের সময় বনবিভাগ থেকে ১০০ জনের বেশি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত লোক মোতায়েন থাকবে। এই নিয়ে খড়্গপুরের ডিএফও মণীশ যাদব বলেন, এই মুহূর্তে বড় হাতির দল সাঁকরাইল আছে।  সেখানে গাইড, ট্র্যাকার, প্রশিক্ষণ হুলাপার্টি ও বনবিভাগের কর্মী মিলে ৬০ জনের একটি টিম মোতায়েন থাকছে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাতায়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য আমার ডিভিশন এলাকায় ২৭০ জন মোতায়েন রাখার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এদের সঙ্গে এলাকার গ্রামবাসীরাও থাকবেন, যাঁরা ট্র্যাকার হিসেবে আমাদের সবসময় সাহায্য করেন।  (মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে ঝাড়গ্রামে কপ্টারের মহড়া।-নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)