• পড়ে থাকা ১৯০৫ কোটি টাকা গ্রামীণ এলাকায় খরচ করতে তৎপর প্রশাসন
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের। পরিবর্তে চালু হতে পারে ষোড়শ অর্থ কমিশন। তাই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পড়ে থাকা বিপুল পরিমাণ টাকা খরচে ঝাঁপিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যে ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৯০৫ কোটি ২ লক্ষ টাকা। নতুন বছরের আগেই সেই অর্থ খরচের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের নির্দেশে এ ব্যাপারে প্রতিটি জেলা প্রশাসন তৎপরতা বাড়িয়েছে। 

    গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নমূল কাজকর্ম করার জন্য ২০২০-’২১ আর্থিক বছরে চালু করা হয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। কেন্দ্রীয় সরকার পাঁচ বছরের জন্য এই কমিশন চালু করে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট কমিশন থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। নিয়ম অনুসারে আর মাত্র সাত মাস সংশ্লিষ্ট অর্থ কমিশনের মেয়াদ। অর্থাৎ ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছর শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষ থেকে সূচনা হতে পারে ষোড়শ অর্থ কমিশন। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 

    প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, এখনও পর্যন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে কোন জেলায় কত টাকার কাজ হয়েছে, কত অর্থ পড়ে আছে, উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করছে রাজ্য সরকার। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ষোড়শ অর্থ কমিশনের পরিকল্পনা করা হতে পারে। 

    অন্যদিকে, পাঁচটি আর্থিক বছরে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে বরাদ্দ অর্থের একাংশ এখনও খরচ হয়নি। রাজ্যের নির্দেশে সাত মাসের মধ্যে সেই অর্থ খরচের পরিকল্পনা নিয়েছে জেলাগুলি। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ বলেন, কোভিড মহামারী ও বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের জন্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ খরচ কিছুটা ব্যাহত হয়। প্রতিটি আর্থিক বছরেই কয়েকটি করে প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়া যায়নি। যারজন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদস্তরে ওই অর্থ জমেছে। এবার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি রূপায়িত করতে জোর দেওয়া হয়েছে। 

    প্রশাসন সূত্রের খবর, পাঁচ বছরে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে বরাদ্দ অর্থের মধ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে এখানও খরচ হয়নি ১ হাজার ৯০৫ কোটি ২ লক্ষ টাকা। এরমধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় খরচ না হওয়া অর্থের পরিমাণ সর্বাধিক, ২২২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। এরপরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্থান, এখানে পরিমাণ ২১৪ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। এরবাইরে উত্তর ২৪ পরগনায় ১৫২ কোটি ১ লক্ষ, মালদহে ১৩৫ কোটি ২ লক্ষ, নদীয়ায় ১০৪ কোটি ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়নি। এছাড়া, বাঁকুড়ায় ৯৫ কোটি ৮ লক্ষ, দার্জিলিংয়ে ৮৯ কোটি, পুরুলিয়ায় ৮৮ কোটি ৫ লক্ষ, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৮৬ কোটি ৭ লক্ষ, পূর্ব বর্ধমানে ৮৫ কোটি ৩ লক্ষ, পূর্ব মেদিনীপুরে ৮৬ কোটি ১ লক্ষ, বীরভূমে ৭৭ কোটি ১ লক্ষ, হাওড়ায় ৭২ কোটি ৫২ লক্ষ, হুগলিতে ৭০ কোটি ৫ লক্ষ, জলপাইগুড়িতে ৫৫ কোটি ৬ লক্ষ, উত্তর দিনাজপুরে ৪৫ কোটি ১ লক্ষ, ঝাড়গ্রামে ৩৫ কোটি ২০ লক্ষ, কালিম্পংয়ে ৩৪ কোটি, আলিপুরদুয়ারে ২৭ কোটি ৪ লক্ষ, কোচবিহারে ৪৪ কোটি ৮ লক্ষ এবং পশ্চিম বর্ধমানে ১৯ কোটি ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)