• নাবালকের সাক্ষ্যে মাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত বাবা, আজ সাজা ঘোষণা
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নাবালকের চোখের সামনে মায়ের গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছিল বাবা। ভয়ে বাইরে বেরিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল সে। সব কথা শুনে ছুটে গিয়েছিল প্রতিবেশীরা। মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু কোনও মতেই মা’কে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর সকালে গাড়িয়াহাট থানার পণ্ডিতিয়া রোডে নৃশংস ঘটনাটি ঘটে।

    খোদ বাবার বিরুদ্ধে বালকের সাক্ষ্যে বাপি দাস নামে অভিযুক্তকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাক্ষ্য চলাকালে এজলাসে একরাশ ঘৃণা নিয়ে বালক তার বাবাকে শনাক্ত করে বলে ছিল, ‘ওই লোকটা আমার মাকে পুড়িয়ে মেরেছিল।’ বুধবার আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মীর রশিদ আলি জানান, বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা। তা শোনা মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়ে বাপি। মামলার সরকারি কৌঁসুলি স্বপনকুমার পাঠক বলেন, ‘প্রায় এক যুগ পর মামলার নিষ্পত্তি হল। ভয়‑ভীতি উপেক্ষা করে মৃতার ছেলে যেভাবে  সাক্ষ্য দিয়েছে তা অবশ্যই তারিফ করতে হয়।’ 

    ২০০০ সালে বাপি দাসের সঙ্গে সীমার বিয়ে হয়েছিল। মাঝে মধ্যেই সীমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলত বাপি। প্রতিবাদ করলেই শুরু হয়ে যেত অশান্তি। ঘটনার দিন সকালে আচমকাই পিছন দিক থেকে বউয়ের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে বাপি দেশলাই জ্বেলে দেয়। গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সরকারি কৌঁসুলি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক ও পুলিসের উপস্থিতিতে ওই গৃহবধূ মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়ে ছিলেন। পরবর্তী সময় ওই নথিকেই এফআইআর হিসেবে গণ্য করে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয় মৃতার স্বামীকে। তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলায় সাক্ষী করা হয় মোট ১৭ জনকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শিবনাথ অধিকারী বলেন, ‘ঘটনাটি এতটাই নৃশংস যে বার বার জামিন নাকচ হয়ে যায় ধৃতের। ফলে জেল হেফাজতে রেখেই চলে তার বিচার।’
  • Link to this news (বর্তমান)