• মাছবাজারে দৈনিক লোকসান ২ কোটি
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: আগামী মাসে বাংলাদেশ থেকে টন টন ইলিশ এপার বাংলার বাজারে আসার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে টানা চলতে থাকা অশান্তির কারণে সে সম্ভাবনা আপাতত বিশ বাঁও জলে। ইলিশ শুধু নয়, ভেটকি, পমফ্রেট, পাবদা, পারশে, ট্যাংরাও আসছে না। সীমান্তে বন্ধ পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল। ফলে মাছের আমদানি-রপ্তানি গিয়েছে থমকে। এ কারণে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানালেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

    বাংলাদেশে আন্দোলন শুরুর সময় থেকেই দু’দেশের সীমান্তে ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। দিন দশেক আগে পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হয়েছিল বলে মাছ আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছিল। কিন্তু ফের সে দেশে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা। ফলে আবার সীমান্তে দাঁড়িয়ে পড়েছে মাছ বোঝাই একাধিক ট্রাক। ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০টির মতো ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন ভেটকি, পমফ্রেট, পাবদা, পারশে, ট্যাংরা সহ অন্যান্য মাছ আসে হাওড়ার বাজারে। এ দেশ থেকেও প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি ট্রাকে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন রুই, কাতলা, ভেটকি, বোয়াল সহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ওপার বাংলায় রপ্তানি হয়। 

    বুধবার হাওড়ার মাছ বাজারে বাংলাদেশ থেকে মাছ নিয়ে কয়েকটি ট্রাক ঢোকার কথা ছিল। তবে একটিও আসেনি। পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় দু’কোটি টাকার উপর ক্ষতি হচ্ছে। কিভাবে সামাল দেবো জানি না।’ আমদানি বন্ধের প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারেও। এদিন কদমতলা, রামরাজাতলা বাজারের মাছ বিক্রেতারা বললেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বেশ কিছু মাছের দাম চড়চড় করে বাড়তে পারে।’

    ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার এদেশে ইলিশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তখন পদ্মার ইলিশ আসা একপ্রকার বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। বছর ছ’য়েক আগে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপুজোর আগে এপার বাংলায় ইলিশ রপ্তানিতে অনুমতি দেয়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় দু’হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি হয়েছিল। হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আসে। এ বছর তা আসবে না বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। হাওড়া ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, ‘এবছর ইলিশ নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি লেখার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে জানা নেই। নতুন সরকার গঠন হলে ফের ইলিশ আমদানির আবেদন জানানো হবে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)