খোদ পরীক্ষা নিয়ামকের সই জাল করে কো-অপারেটিভ থেকে ঋণ!
এই সময় | ০৮ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, মেদিনীপুর: সরষের মধ্যেই ভূত! পরীক্ষা নিয়ামকের সই জাল করে তাঁর নামে স্টাফ কো-অপারেটিভে ঋণের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তা মঞ্জুর হওয়ার আগেই ভাউচার রেডি করে বেয়ারার চেকের মাধ্যমে সেই টাকা সই জাল করে ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টেরও পাননি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক।ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের এক আধিকারিকের দিকে আঙুল উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কারও সঙ্গে এমন হয়েছে কিনা, তা নিয়ে অধ্যাপক-কর্মীরা রীতিমতো উদ্বেগে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্টিস্ট বিপ্লব চক্রবর্তীর অজান্তেই তাঁর নামে ৬০ হাজার টাকা ঋণ চেয়ে আবেদন করা হয় স্টাফ কো-অপারেটিভে।
বেয়ারার চেকে ফের জাল সই করে ক্যাম্পাসে থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ৫৮ হাজার টাকা তুলেও নেওয়া হয়। অথচ তা জানতেই পারেননি বিপ্লব চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘আমি কো-অপারেটিভ থেকে ঋণের জন্য কোনও আবেদন করিনি। অথচ আমার নামে ঋণের আবেদন করে আমার অজান্তেই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরে কর্তৃপক্ষকে জানাই। পুলিশেও এফআইআর করেছি। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।’
আশ্চর্যের বিষয়, জাল সই করে এই ঋণের আবেদন করা হয়েছিল চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। ঋণ মঞ্জুর করা হয় ২৯ ফেব্রুয়ারি। আর টাকার ভাউচার রেডি করা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ আবেদন করার দিনেই। মঞ্জুর হওয়ার আগেই লোনের টাকার ভাউচার প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল! বেয়ারার চেক দিয়ে টাকাও তোলা হয়ে যায় ২৮ তারিখেই।
কী ভাবে ঋণের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার আগেই ভাউচার রেডি হয়ে যায় এবং টাকাও তোলা হয়ে যায়, সে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘এমন একটি অভিযোগ এসেছে। কর্তৃপক্ষ যা যা পদক্ষেপ করার তা করছে। এখনই এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের কর্মী প্রলয় ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল বলে সূত্রের খবর। তবে এ দিন বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘স্টাফ কো-অপারেটিভের বিষয় দেখেন ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের ওই কর্মীই। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত ঘটনা কী, তা জানতে চেয়ে তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তিনি এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।’