• একটা ধুতি- পাঞ্জাবিতেই শিলিগুড়ি, জেনারেল কামরায় সফর, বুদ্ধদেবের স্মরণে অশোক
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • চলে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাম জমানার শেষ মুখ্য়মন্ত্রীর জীবনাবসান। কলকাতার রাজপথ ধরে তাঁর দেহ নিয়ে চলেছে শববাহী শকট। একদিন এই রাস্তা ধরেই রাইটার্সে যেত তাঁর গাড়ি। রাস্তার দুদিকে  পার্টিকর্মীরা, সাধারণ মানুষরা। সকলের চোখে জল। গোটা দেশ হারাল এক সৎ রাজনীতিবিদকে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী শিলিগুড়ির অশোক ভট্টাচার্য। নানা স্মৃতি রয়েছে বুদ্ধবাবুকে ঘিরে।  

    দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে রাজনীতি করেছেন। বহু স্মৃতি ভিড় করে আসছে। বুদ্ধদেববাবুর বার বার শিলিগুড়িতে ছুটে আসা, দার্জিলিং সমস্যার সমাধানে তাঁর পরামর্শ, মন দিয়ে কমরেডদের কথা শোনা, তাঁদের মতামত শোনা, অনেক অনেক কথা ভিড় করে আসছে। শোকে আচ্ছন্ন কমরেড অশোক ভট্টাচার্য। 

    ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছিলেন আপাদমস্তক সৎ। খুব আবেগপ্রবণ। শিলিগুড়িতে যখন আসতেন তখন মাঝেমধ্য়েই আমাদের বাড়িতেই থাকতেন। একটা ধুতি, একটা পাঞ্জাবি। সঙ্গে একটা পুরনো সোয়েটার। সেটাই পরে আসতেন। কোথাও কোনও বাহুল্যতা নেই। কী সাধারণ জীবন! মায়ের সঙ্গে কথা গল্প করতেন। একেবারে বাড়ির মানুষের মতো। ’

    ‘তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল পাঠালে বলতেন তুমি যা ভালো বুঝবে সেটাই করো। মন দিয়ে মতামত শুনতেন। দার্জিলিং সমস্যার নিরসনে তিনি অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। বার বার বলতেন রাজনৈতিক ও আদর্শগতভাবে সমস্যার মোকাবিলা করো। ’

    ‘মতামত শুনতেন,’ বার বার বলেন অশোক ভট্টাচার্য। অনেকের মতে, আজকের রাজনীতির সঙ্গে একেবারেই হয়তো মেলে না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এই মনোভাব। মুখ্য়মন্ত্রী অন্যান্য মন্ত্রীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন সেই জমানা বোধহয় শেষ হয়ে গিয়েছে ২০১১ সালেই। 

    অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার মানুষ ছিলেন। কোনওদিন কুকথা বলতে শুনিনি। আমরা বক্তব্য রাখার সময় একটু সুর চড়ালে তিনি বলতেন নাভি থেকে বলো। কোনওদিন কোনও খারাপ কথা বলতে শুনিনি। এত সৎ মানুষ খুব কম দেখা যায়। তিস্তার বোরোলি আর দার্জিলিংয়ের কমলালেবু আর চায়ের কথা খুব বলতেন। খুব পছন্দ করতেন এগুলো। ’

    অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘জানেন একবার তখন আমাদের পার্টি ক্ষমতায় ছিল না। তিনি শিলিগুড়িতে এসেছেন। তাঁর রিজার্ভেশন করার মতো আর্থিক অবস্থা আমাদের ছিল না। তিনি দার্জিলিং মেলের জেনারেল কামরায় শিলিগুড়ি থেকে শিয়ালদা চলে গিয়েছেন। মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার পরে উত্তরবঙ্গের চা বাগানের সমস্যা নিরসনে, এখানকার শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে তিনি অত্যন্ত উদ্যোগী হতেন। ’
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)