• ‘উত্তরবঙ্গ ফুলের বাগান, ক্ষতি না হয় দেখো!’ বলতেন বুদ্ধবাবু, স্মৃতিচারণায় সিপিএম
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ আগস্ট ২০২৪
  • ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। জীবনাবসান হল বামফ্রন্টের শেষ মুখ্য়মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। একটি যুগের অবসান। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া উত্তরবঙ্গেও। কী বলছেন উত্তরবঙ্গের বাম নেতৃত্ব? মাথার উপর অভিভাবকের মতো ছিলেন যে নেতা তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সিপিএম নেতৃত্ব।

    সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ির সিপিএম নেতা জীবেশ সরকার: হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে তিনি বলেন, বুদ্ধবাবু আজীবন কমিউনিস্ট ছিলেন। তিনি ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক। তাঁর সহজ সরল জীবন আমরা চিরদিন অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। 

    কথা বলতে বলতেই ভারী হয়ে আসে জীবেশ সরকারের গলা। বলেন, কত কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তিনি উত্তরবঙ্গে এলে প্রথম দিকে পার্টি কর্মীদের বাড়িতেই থাকতেন। পরবর্তীতে তিনি সার্কিট হাউজে থাকতেন। অত্যন্ত পড়াশোনা করতেন। বার বার বলতেন, উত্তরবঙ্গ ফুলের বাগানের মতো, কেউ যেন এখান থেকে ফুল না ছেঁড়ে সেটা দেখো। এই বাগানের যেন কোনও ক্ষতি না হয় দেখো। 

    তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীনও গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে অশান্ত হয়েছে পাহাড়। সেই অশান্তি থামাতে দফায় দফায় দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ছুটে এসেছেন শিলিগুড়িতে। তবে পাহাড় ও সমতলের মধ্যে কোনও দিন কোনও বিভেদ চাইতেন না তিনি। জীবেশ সরকার বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে নতুন করে সাজাতে চাইতেন তিনি। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ করে যেতে পারলেন না তিনি। 

    তারিনী রায়, সিপিএমের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সম্পাদক জানিয়েছেন, আজ অনেক কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেই যুব আন্দোলন যখন থেকে করছেন তখন থেকেই তিনি কোচবিহারে আসতেন। একেবারে সহজ সরল জীবন। স্বচ্ছতা ছিল তাঁর পোশাকে, স্বচ্ছতা ছিল তাঁর জীবনযাপনে। মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি বার বার এসেছেন কোচবিহারে। সেই দিনগুলোর কথা আজ মনে পড়ে যাচ্ছে। খুব পড়াশোনা নিয়ে থাকতেন। রাত পর্যন্ত পড়াশোনা, লেখালেখি করতেন। এখানকার সংস্কৃতি, এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছু খোঁজখবর রাখতেন। 

    তিনি বলেন, তখন গ্রেটার আন্দোলন একেবারে তুঙ্গে। সেই সময় বুদ্ধবাবু কোচবিহারে এসেছিলেন । এয়ারপোর্টের মাঠে বিরাট সভা হয়েছিল। সেই সভায় বক্তব্য রেখেছিলেন বুদ্ধবাবু। পশ্চিমবঙ্গকে যারা ভাগ করতে চাইছেন তাদের বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তোলা হয়েছিল সেই সময়। 

    বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রয়াত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যের বাম মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, তাঁর প্রয়াণে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।  
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)