• গাড়িচালককে ‘আপনি’ ছাড়া সম্বোধন করেননি কোনওদিন, অসুস্থ শরীর নিয়েই ‘অভিভাবকের’ শেষযাত্রায় ওসমান...
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘আপনি’ ছাড়া সম্বোধন করতেন না। গাড়িচালক বলে কখনও ছোট চোখেও দেখেননি। তিনি মহম্মদ ওসমান। অভিজ্ঞতাটা কিন্তু একদিনের নয়। দীর্ঘ ২৮ বছর গাড়ি চালিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে আর বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি তিনি। শেষবারের মত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে এসেছিলেন তাঁকে দেখতে। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি ছাড়া বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কখনও সম্বোধন করেননি। শেষবারও যখন দেখা হয়েছিল তখনও বলেছিলেন, ভালো থাকবেন। কখনও নাম ধরে ডাকেননি। বাবু অথবা ওসমান বাবু বলে ডেকেছেন সবসময়’। বয়সের ভারে এখন শরীর অনেকটাই ঝরে গিয়েছে ওসমানের।

    ২০২২ সালে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। অসুস্থতার কারণে ঠিকমত কথা বলতে পারেন না এখন। তবে এদিন নিজের বড় ছেলে মহম্মদ জামশেদ আলিকে সঙ্গে নিয়ে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে এসেছিলেন ওসমান। জানালেন, ‘আমার খুব খারাপ লাগছে। খুব খারাপ লাগছে’। খুব বেশীক্ষণ কথা বলতে পারেননি তিনি। বাবার হয়ে জামশেদ জানালেন, ২৮ বছর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা। বুদ্ধদেবও ওসমান ছাড়া চলতে পারতেন না। ৬০০২ নম্বরের সাদা রঙের অ্যাম্বাসডর আর ওসমানকে নিয়েই রওনা দিতেন রাইটার্সের উদ্দেশে। জামশেদ বলেন, ‘২০১৬ সালে বাবা যখন অবসর নেন তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি যখন জানতে পারলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ওসমান ছাড়া গাড়িতে বসবেন না তখন পরিবহণ দপ্তরে বলে ওসমানের চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে দিলেন যাতে করে ফের যাতায়াত শুরু করতে পারেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

    নিজের জীবনে সততার জন্য শুধু নিজের দলের নয় বিরোধী দলের নেতারাও শ্রদ্ধা করতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এদিন ওসমানের ছেলে জামশেদ বললেন, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বাবাকে একটা কথা খুব বলতেন। যেহেতু সাদা জামা পড়তেন ওসমান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলতেন সেই জামায় যেন কখনও দাগ না লাগে’। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সেই কথাটি শুধু যে নিজেই মেনেছেন ওসমান তা নয়, নিজের সন্তানদেরও শিখিয়েছেন। ওসমানের কথায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁদের কাছে একজন ‘অভিভাবক’।
  • Link to this news (আজকাল)