• তাঁর পাঞ্জাবিটা সাদাই রয়ে গেল
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • আশিস ঘোষ 

    একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি। তিনি জীবিত থাকতেই ভেঙে পড়েছে বামফ্রন্ট সরকারের লোহার দুর্গ। তিনিই সিপিএমের শেষ মুখ্যমন্ত্রী। রাইটার্স ছেড়ে এলেও তিনি রেখে গেলেন বহু বিতর্ক। বামফ্রন্ট সরকারের শেষদিকে খুব চালু হয়েছিল একটা কথা --ব্র্যান্ড বুদ্ধ। কী সেই ব্র্যান্ড? এটা একটা কমিউনিস্ট পার্টির রেওয়াজে প্রায় অসম্ভব একটা জিনিস। পার্টির ঊর্ধ্বে উঠে কোনও একজন ব্র্যান্ড অন্তত তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব নয়। তবু সব দেশেই পার্টির এক একটা মুখ তো থাকেই। যেমন জ্যোতি বসু। বুদ্ধদেব তেমনই এক ব্র্যান্ড। কী সেই ব্র্যান্ড? এই ব্র্যান্ড শিল্পপতিদের কাছে আতঙ্কের নয়।

    তিনি শিল্পবান্ধব, যিনি দেং শিয়াও পিংয়ের মতো পুঁজির রং দেখেন না। সিটুর কথায় কথায় বনধ ডাকা তাঁর ঘোর অপছন্দ। সবমিলিয়ে সিপিএমের নতুন যুগের স্বপ্ন বেচার সেলসম্যান। সিঙ্গুরে কার ভুলে ফ্রন্টের জাহাজ চড়ায় আটকে গিয়েছিল সে নিয়ে তক্কো ফুরোনোর নয়। সেই বিতর্কে বেঁচে থাকবেন বুদ্ধদেব। প্রমোদ দাশগুপ্তের বাছাই তরুণ ব্রিগেডের একজন বুদ্ধদেব। অন্যদের তুলনায় বরাবরই নেকনজরে। কাজ করেছেন ছাত্র-যুব ফ্রন্টে। তখন থেকেই তিনি আলাদা। তাঁর সুভাষ চক্রবর্তীর মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল না, এক ডাকে ব্রিগেড ভরানোর ক্ষমতা ছিল না।

    তবু তিনি আলাদা বাকিদের থেকে। নইলে চোরদের মন্ত্রিসভায় থাকবেন না বলে পার্টির যাবতীয় শৃঙ্খলা ভেঙে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেও তিনি ফিরে এসেছেন স্বমহিমায়। কোনও শাস্তি হয়নি। এমনকী পরের দিকে তাঁকে 'ক্যাপিটালিজমের পোস্টার বয়: বলে ডাকা হলেও তিনি ছিলেন তাঁর জায়গাতে। তবে একটা কথা বলতেই হবে যা এখনকার সময়ে আরও জোর দিয়ে বলতে হবে। কেউ দুর্নীতির কোনও কালি লাগাতে পারেনি তাঁর ধবধবে সাদা পাঞ্জাবিতে। তাঁর সম্পর্কে অন্য অনেক কিছু নিয়ে কথা হতে পারে।কিন্তু দুর্নীতি নিয়ে একটাও নয়।
  • Link to this news (আজকাল)